ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৫জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নাদপাড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে শৈলকুপা থানার ওসি মো. মাসুম খান জানান। আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
নাদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে প্রার্থী ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমির মতিয়ার রহমান এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা নওশের আলীর মেয়ে নুরজাহান বেগম।’ দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে উভয়পক্ষের তিনজন করে নাম পাঠান। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘দুপুরে মিটিং চলাকালে নাম প্রস্তাব নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্কুল থেকে বের হয়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।’ গ্রামের লোকজন জানান, সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট।
শৈলকুপা থানার ওসি মো. মাসুম খান বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। চারটি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। এ ব্যাপারে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একে অপরকে দোষারূপ করেছে।
শৈলকুপা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, নাদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটিতে তিনি আহ্বায়ক পদ প্রত্যাশী ছিলেন। তার লোক প্রধান শিক্ষকের সুপারিশপত্র সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিতে নিয়ে যাচ্ছিল। নাদপাড়া বাজারে বিএনপি লোকজন তদের ওপর হামলা চালায়। এতে দলের ১০-১২জন কর্মী আহত হয় বলে দাবি করেন তিনি।
শৈলকুপা থানা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বাবুল মোল্লা বলেন, দলীয় কমী নুর জাহান বেগম নাদপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক পদে প্রার্থী ছিলেন। সুপারিশপত্র আনতে গেলে জামায়াতের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এতে তাদের ২০কর্মী আহত হয়। দুজনের অবস্থা গুরুতর।
ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতার ছেলে নিহত
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান বাজারে মোটরসাইকেল উল্টো সন্টু মিয়া (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সন্টু মিয়া সদর উপজেলার বাড়িবাথান গ্রামের বিএনপি নেতা জিনারুল হোসেনের ছেলে। সন্টুর সঙ্গে থাকা বন্ধুরা জানান, সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রাম থেকে তিনি দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় জিগজ্যাগ কায়দায় মোটরসাইকেল চালানোর এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় উপুড় হয়ে ছিটকে পড়েন সন্টু মিয়া। এ সময় স্থানীয় নগরবাথান বাজারের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. গুলশান আরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মোটরসাইকেল আরোহী যুবক মারা গিয়েছিলেন। মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহতের পরিবারের চাওয়া অনুযায়ী পোস্টমর্টেম ছাড়াই মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন ওই যুবক। নিহত সন্টুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.