ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। নৌকা প্রতীকের প্রার্থিতা বাতিল ও দুই প্রার্থীর পক্ষে পাল্টাপাল্টি মামলায় সরগরম ভোটের মাঠ অনেকটাই ফাঁকা। ছন্দপতন ঘটেছে প্রচার প্রচারনায়। পুলিশ র্যাব ও জেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে শহর জুড়ে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের আহবায়কসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাই এম এ লতিফ শাহরিয়ার জাহেদী প্রজ্জল বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলাটি করেন। অন্যদিকে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর পক্ষে ছোটকামারকু-ু গ্রামের ইয়াকুব বিশ্বাসের ছেলে মোফাশ্বের হোসেন পল্টু পাল্টা মামলা করেছেন। এই মামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানো প্রথম সারির ব্যক্তিদের আসামী করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, গত বুধবার ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় আসামিরা এই হামলা করেন বলে বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে দায়েরকৃত মামলায় আসামিরা হলেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক আশফাক মাহমুদ জন, কালিকাপুরের বক্কারের ছেলে তুষার, ভুটিয়ারগাতি গ্রামের কিতাব জোয়ারদারের ছেলে আলম জোয়ারদার, দরিগোবিন্দপুর গ্রামের মোবাশ্বেরের ছেলে রাশিদুল ইসলাম, কালিকাপুরের কিতাবদি ম-লের ছেলে আবু বক্কার, দরিগোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল হাই, ভুটিয়ারগাতি গ্রামের তাছের, একই গ্রামের আনু ম-লের ছেলে এরশাদ, মফিজ উদ্দীনের ছেলে আশিক, সালাহউদ্দীনের ছেলে আশিক (২). নওশের আলীর ছেলে সুমন, আব্দুল খালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর, ছোটকামারকু-ু গ্রামের ইয়াকুব বিশ্বাসের ছেলে মোশাররফ হোসেন বল্টু, মোফাশ্বের হোসেন পল্টু, মিন্টুর ছেলে মিশন, পবহাটী গ্রামের কাজী ইসাহাকের ছেলে যুবলীগ নেতা দিপুল কাজী, কাটা রফিক, খাজুরা গ্রামের রাশেদ, রাজু, জাহিদ, শিকারপুর গ্রামের লতিফ মালিতার ছেলে ফয়জুল্লাহ, করাতিপাড়া গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা আল ইমরান ও ব্যাপারীপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে উজ্জল। বাদী তার এজাহার উল্লেখ করেন, আমার ভাই কাইয়ূম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল আসন্ন ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে ‘নারিকেল গাছ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর থেকেই প্রতিপক্ষ আব্দুল খালেকের লোকজন নির্বাচন থেকে বিরত হতে হুমকি, প্রচারণায় বাধা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর লুটপাট করছে। ১৫ মে আব্দুল খালেকের সমর্থক তুষারের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় মামলা করার পরও আব্দুল খালেকের সমর্থকরা থেমে থাকেনি। বরং তারা প্রচার প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি সর্বপরি গত বুধবার ধোপাঘাটা ব্রীজ এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে প্রার্থীসহ ৮-১০ জনকে চরমভাবে আহত করে।
এদিকে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় হামলা চালানোর অভিযোগ পাল্টা মামলা করা হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে মোফাশ্বের হোসেন পল্টু বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা হলেন, শান্তি জোয়ারদার, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাই প্রজ্জল, ঝিনুক টাওয়ার এলাকার রুহুল মিয়ার ছেলে লাবু মিয়া, পবহাটি গ্রামের মইনুদ্দীন শাহের ছেলে আসাদ, ওমর আলীর ছেলে ইউনুস আলী, পার্কপাড়ার ফারুক হোসেনের ছেলে রুবেল, আরাপপুরের নায়েব আলী মাস্টারের ছেলে জামাল, হামদহ মোল্লা পাড়ার আবু বকরের ছেলে মারুফ, পবহাটি গ্রামের শরিফুল ইসলাম, বেড়গ্রামের বাচ্চু, মতলেব শাহের ছেলে মনিরুল, কালিকাপুরের রিপন, মথুরাপুরের আনিচ, কাশেম, মহিদুল, আক্তার, আরাপপুরের কানু, সাবুদ, মোমিন ও হাসানসহ ৫০/৬০ জন অজ্ঞাত। বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন আসামীরা নৌকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ধারালো ও ভোতা অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।