ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে এক নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। ভাংচুর করা হয়েছে ৫টি বাড়িঘর। আজ সকালে শৈলকুপা উপজেলার ভাটবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অন্য একটি ঘটনায় রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মকলেছুর রহমান ওরফে পাইলট (৫০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। নিহত গৃহবধূ সুফিয়া খাতুন (৫৫) সারুটিয়া ইউনিয়নের ভাটবাড়িয়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের স্ত্রী এবং পাইলট বৃত্তিপাড়া গ্রামের মৃত আনসার খন্দকারের ছেলে। এ পৃথক দুটি সংঘর্ষে মোট ১৩ জন আহত হয়।
এলাকাবাসী সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মামুন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুলফিকার কায়সার টিপুর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে ভাটবাড়িয়া গ্রামে টিপু সমর্থক আজিবর মেম্বার ও মামুন সমর্থক আফজাল বিশ্বাসের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে গতকাল সোমবার সকালে প্রতিপক্ষ আলাল ও রেজাউলের নেতৃত্বে হিরোকের বাড়িতে হামলা চালালে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় জালাল উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন আরও ৬ ব্যক্তি। এসময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে।
নিহতের ছেলে বেলাল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে সারুটিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন ও গত নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর সমর্থকদের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ দুজনের সমর্থনে প্রতি গ্রামে দুটি সামাজিক দল সৃষ্টি হয়েছে। তারা টিপুর সমর্থক আজিজুর রহমান মাতব্বরের দলে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গতকাল সোমবার সকাল ৬টার দিকে মামুন চেয়ারম্যান সমর্থকরা গ্রামে তাদের প্রতিপক্ষ আফজাল বিশ্বাসের দলের প্রায় একশ লোক তাদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা ঘরে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা ঘর ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাদের ওপর হামলা করে। মা সুফিয়া বেগম ছেলেদের বাঁচাতে বাধা দিলে হামলাকারীদের বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। খবর পেয়ে শৈলকুপা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই হামলাকারীরা চলে যায়।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার সকালে সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর কর্মী সমর্থকরা বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুর ও ৭ জন আহত হয়। আহতদের শৈলকুপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মকলেছুর রহমান ওরফে পাইলটকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ৩০ জনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানায়, আহত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন। লুটপাট ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সকালে নারী নিহতের ঘটনায় সংঘর্ষ এড়াতে সেখানেও পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।