ঝিনাইদহের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ আলী ইবিকে এখন আর মাদরাসা বলে ছোট করার সুযোগ নেই

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ আলী বলেছেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আইন অঙ্গণে ভালো করেছেন। যেহেতু দেশ-বিদেশে ভালো ভালো পদে আসিন আছেন এখন মনে হয় আর (ছোট করার অর্থে) মাদরাসা বলার সুযোগ নেই। মাদরাসা বলে ট্যাগিং করাটা যে মিথ্যা সেখান থেকে বেরিয়ে সফলতার মাধ্যমে প্রমাণ করার দায়িত্ব তোমাদের (শিক্ষার্থীদের)। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে হাইকোর্ট, বিভিন্ন জেলা জজ, আইনজীবীসহ অন্যান্য পেশায় জায়গা করে নিয়েছেন। এখানে সাধারণ ও বিজ্ঞান শাখার বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টও আছে, সেখান থেকে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পদে রয়েছে।’ গতকাল শনিবার ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগে আয়োজিত এক মুট কোর্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আইনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ আলী বলেন, ‘আমাদের একটু সমস্যা হয় যে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে থিওরি পড়াশোনা করি। কিন্তু আমাদের প্রাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা থাকে না। তাই এ মুট কোর্টের মাধ্যমে একটা অভিজ্ঞতা তৈরি হবে, তা পরবর্তীতে কাজে লাগানোর সুযোগ হবে। আইন পড়ে তোমরা কেউ ভুল করোনি। আইন পেশা মানুষকে সেবা করার একটি অনন্য মাধ্যম। যদিও আইন একটা রসকষহীন সাবজেক্ট। কিন্তু একটু পরিশ্রম করে লেগে থাকলে এই পেশায় সফল হওয়া যায়। তোমরা যারা সিনিয়র আছো তারা জুনিয়রদের শেখাবে। যোগ্য হতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু, সফলতার সংক্ষিপ্ত কোনো রাস্তা নেই।’ তিনি বলেন, ‘বিচারক কিংবা আইনজীবী যাই হোক তাদের মূল কাজ হচ্ছে আইন খুঁজে বের করা বরং মুখস্থ করা না। আমরা এখনও কোন আইন কোথায় আছে, দেখে দেখে সমাধানের পথ বের করে থাকি। তোমরা যে পেশায় যাও না কেন সৎ গুণটা ধরে রাখবে। দেশ ও দশের সেবা দিবে।’ অনুষ্ঠানে ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহিদা আখতার বলেন, ‘আপনারা সবাই বিচারক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ অনেক কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। আমাদের গর্বের বিষয় হলো, এই বিভাগ থেকে ইতোমধ্যেই দুইজন শিক্ষার্থী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা আমাদের বিভাগের জন্য একটি অনন্য অর্জন এবং আপনাদের জন্য প্রেরণার উৎস। তাদের সাফল্য প্রমাণ করে, ইচ্ছা ও পরিশ্রম থাকলে আপনাদেরও সেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব।’ সভাপতির বক্তব্যে সহকারী অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজকের এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জন করতে পারেবে। বাস্তব জীবনে প্রায়োগিক জ্ঞানই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। আমাদের বিভাগের শুরুতে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ছিলো। এখন সেইসব সীমাবদ্ধতা আমরা মোটামুটি কাটিয়ে উঠেছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা এখনই বাংলাদেশের বিভিন্ন কোর্টে কর্মরত রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী সহকারী জজ হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমাদের বিভাগের সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে বিভাগ এগিয়ে যাবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবু তালেব। এছাড়াও বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগে চতুর্থ বর্ষের পাঠ্যসূচিতে ইন্টার্নশিপ ও মুট কোর্ট অনুশীলন নামে একটি অংশ রয়েছে। যেখানে ইন্টার্নশিপ অংশে শিক্ষার্থীরা আইন পাঠের পর বিভিন্ন আদালতের আইনজীবীদের মাধ্যমে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং মুট কোর্ট অনুশীলন অংশে একটি কাল্পনিক আদালতও থাকে। যেখানে বিচারকের আসনে বসে বিচারক এবং কাল্পনিক মামলার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More