জ্ঞানরাজ্যের ক্ষুধা মেটানোর অন্যতম মাধ্যম হলো বই : নির্বাহী অফিসার এম সাইফুল্লাহ

চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ী বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে 

নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিজলগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাইফুল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ে দাপ্তরিক খাতাপত্র, শ্রেণিকক্ষ এবং ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখেন। একপর্যায় দশম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বই জ্ঞানের ভান্ডার। বই জ্ঞানের প্রতীক। বই মানুষের মাঝে জ্ঞানের পরিধি বাড়ায়। একটি ভালো বই ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়ে তোলে। বই-ই জ্ঞান অর্জনের প্রধান মাধ্যম। জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হলে অবশ্যই বই পড়তে হবে। কেননা, বই যতই পড়া যাবে, বিচিত্র জ্ঞানের ভান্ডার ততই বৃদ্ধি পাবে। বই পড়ার মধ্য দিয়ে মানুষ বিশাল জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করে এবং অনেক অজানা দিগন্ত উদ্ভাসিত হয়ে যায়। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনীষীদের সান্নিধ্য আমরা বইয়ের মাধ্যমেই লাভ করতে পারি। যুগে যুগে মানুষের জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প সাহিত্য সাধনার নীরব সাক্ষী বই। এ বিশ্বের বড় বড় জ্ঞানী ব্যক্তিই ছিলেন বইপ্রেমিক। বহু ভাষাবিদ ও বহুমুখী জ্ঞানের অধিকারীরা বই পড়ার প্রতি বেশি আসক্ত ছিলেন। সূর্যের আলোতে যেরূপ পৃথিবীর সকল কিছুই ভাস্বর হয়ে ওঠে, তেমনি জ্ঞানের আলোতে জীবনের সব অন্ধকার আলোকোদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। আমরা যত বড় বড় জ্ঞানী, সাহিত্যিক, কলামিস্টদের নাম শুনি, তাদের জীবন পড়লে পাওয়া যায় বই পাঠ এবং সংগ্রহের প্রতি ছিল তাদের ভীষণ আগ্রহ। জ্ঞানী ব্যক্তিরা জ্ঞানের মূল্য বোঝেন তাই তারা বই পড়েন। সংসারের দুঃখ কষ্টের বোঝা তার অনেকখানি কমে যায়। শুধু পাঠ্যসূচির কয়েকটি বই পড়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রিতেই জ্ঞানের পূর্ণতা অর্জন করা যায় না। এজন্য বহুমুখী প্রতিভা অর্জন ও বিচিত্র জ্ঞানের জন্য নানা ধরনের বই পড়তে হয়। জ্ঞানার্জনের নির্দিষ্ট বই এবং নির্ধারিত কোনো সময়সীমা নেই। জ্ঞানরাজ্যের তৃপ্তি মেটানোর জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। মানুষের দুই ধরনের ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। একটি হলো দৈহিক ক্ষুধা, অন্যটি মানসিক ক্ষুধা। দৈহিক ক্ষুধার চাহিদ সাময়িক এবং সহজলভ্য। মানসিক ক্ষুধার চাহিদা এর স¤পূর্ণ উল্টা। এটা পূরণ করাও খুব কঠিন। জানার জন্য পড়তে হবে। পড়ার প্রধান মাধ্যম হলো বই। কোরআনে এরশাদ আছে যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি কখনো সমান ? না তারা কখনো সমান হতে পারে না। জ্ঞানরাজ্যের ক্ষুধা মেটানোর অন্যতম মাধ্যম হলো বই। বই আত্মার খোরাক জোগায়। বই পড়া হলো অনাবিল আনন্দের অফুরন্ত উৎস। অন্ধকার যেমন আলো ছাড়া দূরীভূত করা যায় না। তেমনি বই ছাড়া কেউ জ্ঞানী হতে পারে না। আমাদের সমাজ আজ বইবিমুখ। বই ক্রয় করা এবং পড়ার প্রতি আগ্রহ নেই। আবার সংগ্রহে থাকার পরও পড়ার প্রতি আগ্রহ নেই। আলসেমি করে অবসর সময় কাটান, টিভি, ডিস অ্যান্টিনা এবং ইন্টারনেটের মোহে আসক্ত হয়ে এদিকে সময় ব্যয় করেন। বই পড়ার অভ্যাস হ্রাস পাওয়ার কারণেই আজকের ছেলে-মেয়েরা নানা অপরাধ জগতে জড়িয়ে যাচ্ছে। আজকের তরুণ নেশাগ্রস্ত। বই আমাদেরকে পড়তে হবে। বই পড়ার আনন্দ তখনই সার্থক হবে, যখন বই নির্বাচন সঠিক হবে। ভালো বইকে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো নিত্যসঙ্গী করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, একটি ভালো বই অনন্ত যৌবনা। বই মানুষের জীবনে এবং চলার পথে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মানবজীবনে ভালো বইয়ের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও পরিবারকে আলোকময় করতে এবং সমাজকে উন্নত করতে বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, যিনি জেনে পড়েন না, আর যে পড়তে পারে না তাদের মধ্যে কোন প্রার্থক্য নেই। তাই কোন কিছুর পরিবর্তন আনতে হলে নিজের ভিতর থেকে পরিবর্তন হতে হবে। বড় স্বপ্ন মানুষকে বড় করে তোলে। এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন স্বপন বিদ্যালয়ের লেখাপড়া এবং সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন। উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা সার্জিনা খাতুন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More