জীবননগর ব্যুরো: আলু বিক্রিতে সরকারের বেধে দেয়া মূল্য জীবননগরের বাজারগুলোতে উপেক্ষিত। বাজার মনিটরিং কমিটির তদারকি ও উচ্চমূলে আলু বিক্রির দায়ে দুই ব্যবসায়ীকে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করলে রাতারাতি বাজার থেকে আলু উধাও হয়ে যায়। তবে বিশেষ পরিচিত ক্রেতারা আলু পাচ্ছেন। তবে মূল্য প্রতিকেজি ৫০ টাকা।
ব্যবসায়ীদের দাবী, সরকারিভাবে মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা না করে শুধুমাত্র পাইকারী ও খুচরা বাজারে অভিযান চালালে কোন সুফল মিলবে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মজুদদাররা শ’ শ’ টন আলু কিনে হিমাগারে মজুদ করে রেখেছেন। ফড়িয়ারা মজুদদারদের কাছ থেকে আলু কিনতে গেলে কোল্ড স্টোরের গেট থেকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশী দামে আলু কিনতে হচ্ছে। উচ্চমূল্যে আলু কিনে আড়ত ও খুচরা বাজারে কম দামে বিক্রি করা অসম্ভব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন্ড স্টোর গেট মূল্য ২৩ টাকা বাস্তবায়ন করা গেলে পাইকারী ও খুচরা বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজার মনিটরিং ও কৃষি বিপণন অধিদফতরের বেধে দেয়া আড়তদারদের ২৫ টাকা ও খুচরা বিক্রেতাদের ৩০ টাকা দরে আলু বিক্রির নির্দেশনা দেয়। রাত পার হতে না হতেই শুক্রবার সকাল থেকে জীবননগর বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধ করে দেয়। সাধারণ ক্রেতারা বাজারে আলু কিনতে যেয়ে না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। ক্রেতাদের দাবি দেশে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কি কারণে রাতারাতি মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।
জীবননগর আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আশাদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ফড়িয়ারা মোকাম থেকে পরিবহন ও লেবার খরচসহ কেজি প্রতি আলুর দাম পড়ে ৪২টাকা। খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বৃহস্পতিবার বিক্রি করা হয়েছে কেজি প্রতি ৪৩ টাকা দরে। আড়ত পর্যায়ে ২৫ টাকা দাম বেধে দেয়ায় উচ্চমূল্যে কেনা আলু লোকসানে বিক্রি করতে রাজি না ফড়িয়ারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফড়িয়া বলেন, জীবননগর বাজারে আসা আলুর অধিকাংশই রংপুর, কালীগঞ্জ, রাজশাহী, পঞ্চগড় ও কোটচাঁদপুর থেকে আসে। এছাড়াও সন্তোষপুর, খালিশপুর কোন্ড স্টোরেজ থেকে আমাদের কাছে উচ্চ মূল্যে আলু বিক্রি করে। পরিবহন খরচ দিয়ে আনা এ সমস্ত আলু ২৫টাকা দরে বিক্রি করলে পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোকাম ও কোল্ড স্টোরেজগুলোতে অভিযান চালালে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি সম্ভব।
জীবননগর বাজার কাচামাল খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলেক হোসেন হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গত বৃহস্পতিবার জীবননগর পাইকারী বাজার থেকে আমরা ৪৩ টাকা দরে আলু কিনেছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ে এসে ৩০ টাকা দামে আলু বিক্রির জন্য বলেন। বেশি দামে আলু কিনে কিভাবে আমরা কম টাকায় বিক্রি করবো। ঝামেলা এড়াতে বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন জানান, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাট-বাজারগুলোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রির কথা জানিয়ে দিয়েছি।