জীবননগরে ছাগল মারার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : দু সপ্তাহ বাড়ি ছাড়া একটি পরিবার

জীবননগর ব্যুরো: পৌর শহরের আশতলাপাড়ায় একটি তুচ্ছ ঘটনা থেকে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়, যার জেরে ১৩ দিন ধরে বাড়িছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে একটি পরিবার। অভিযোগ রয়েছে, একটি শিশু ছাগল মারার জেরে ওই শিশুকে মারধর করা হয়েছে বলে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। সংঘর্ষের পর থেকে শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রতিপক্ষের ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম জানান, গত ৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রতিবেশী লিটন হোসেনের শিশু সন্তান মুরসালিন তার একটি ছাগলকে আঘাত করে। এতে তিনি শিশুটিকে শাসিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার পরই লিটন হোসেন, রুবেল, জুবায়ের, জলিল ও রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
শহিদুল ইসলামের অভিযোগ, হামলার পর থেকে তিনি পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে— আমরা বাড়িতে ফিরলে হাত-পা ভেঙে দেবে। স্থানীয় নেতারা বাড়ি ফেরার আশ্বাস দিলেও নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
সরেজমিনে শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি ফাঁকা পড়ে আছে। ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে, আশপাশে ময়লা-আবর্জনা জমে গেছে। এলাকাবাসী মনে করছেন, তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে একটি পরিবারকে এতদিন ধরে বাড়িছাড়া করে রাখা অনৈতিক ও বেআইনি। অভিযুক্ত জলিল উদ্দিন বলেন, আমরা তো তাকে (শহিদুল) বাড়ি ফিরতে নিষেধ করিনি। তারা নিজেরাই আসছে না। ঘটনা এখনও আপস হয়নি, বাবু খান আসলে আপস হবে।
জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হযরত আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি দুই পক্ষকে নিয়ে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু লিটন বসতে রাজি হয়নি। তাদের দাবি, বাবু খান এসে সমঝোতা করবেন। তবে আমি শহিদুলকে বাড়ি ফিরতে বলেছি। আমার বিশ্বাস, তিনি বাড়ি ফিরলে কেউ তাকে আক্রমণ করার সাহস পাবে না।
জীবননগর থানার ওসি মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, এ বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি আপস-মীমাংসার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন। তবে শহিদুল ধাবকের বাড়িছাড়া হওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পরিবারকে এতদিন ধরে বাড়িছাড়া করে রাখা দুঃখজনক। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের নিরাপদে বাড়ি ফিরিয়ে দেয়া দরকার।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More