চুয়াডাঙ্গা কুন্দিপুরের প্রাইভেট শিক্ষক হুমায়ুনের প্রতারণার ফাঁদে অনেকেই : অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা
বেগমপুর প্রতিনিধি: শিক্ষক সমাজের দর্পণ। খুব সহজেই এদেরকে বিশ্বাস করে থাকেন মানুষ। গ্রামের সহজ সরল মানুষেরা পরামর্শ নিতে অনেকেই দারস্ত হয় শিক্ষকের। এসব মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করে থাকেন অনেকেই। এমনি চুয়াডাঙ্গার কুন্দিপুর গ্রামের প্রাইভেট শিক্ষক হুমায়ুন কবির দরিদ্র মানুষের দারিদ্রতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তি তুলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে গাঢাকা দিয়েছেন হুমায়ুন। এদিকে এনজিও পাওনাদারদের চাপাচাপিতে মানবতের জীবনযাবন করছেন অনেকেই।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের কুন্দিপুর গ্রামের মইন হকারির ছেলে হুমায়ুন কবির ১২ বছর আগে পৈত্রিক সূত্রধরে গ্রামে আসেন। সুদর্শন চেহারা মুখে মিষ্টভাষা কাজে লাগিয়ে গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ের সাথে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকেন তিনি। গ্রামেই শুরু করেন কোচিং সেন্টার খুলে প্রাইভেট পড়ানোর কাজ। পড়ানোর কৌশল দেখে সুনামও ছড়াতে থাকে তার। স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েরা হুমায়ুনের কাছে প্রাইভেট পড়তে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। গ্রামের মাহাত্তাব উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিম জানান, প্রাইভেট পড়ানোটা ছিলো তার হাতিয়ার। প্রাইভেট পড়ানোর পাশাপাশি রাতারাতি কোটিপতি হতে সীমানা পিলার, ম্যাগনেট পাথার, তামার পয়সা কিংবা তক্ষক সাপের পেছনে ছুটতে থাকেন। এসবের পেছনে ছুটতে গিয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে এবং গরু ছাগল বিক্রি করে টাকা হাতাতে থাকেন তিনি। আমার কাছ থেকে ১ লাখ, হাশেমের স্ত্রী বিলছন নেছার নিকট থেকে দেড় লাখ, আনোয়ারের স্ত্রী রেখা খাতুনের নিকট থেকে ৪০ হাজার, নেহালপুর গ্রামের সাজ্জাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজারসহ নাম নাজানা অনেকের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। সুন্দর ব্যবহার আর শিক্ষক হিসেবে অনেকই টাকা ধার দিতো। তার আচরণের কারণে তাকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিলো না। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে গাঢাকা দিয়েছেন হুমায়ুন। অপরদিকে এনজিও পাওনাদারদের কিস্তির চাপাচাপিতে মানবতের জীবনযাবন করছেন অনেকেই। গ্রামের অনেকেই জানান, মানুষের কাছ থেকে কিভাবে টাকা নিতে হয় সে কৌশল তিনি জানেন। কথাবার্তা শুনে মনে হতো লাটসাহেব। একজন পাওনাদার তার টাকা না পেয়ে বাড়ি পর্যন্ত তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। রাতের আঁধারে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক হুমায়ুনের একাধিক ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।