স্টাফ রিপোর্টার: মসজিদের ইমাম নিয়োগ, তুচ্ছ পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ, তুচ্ছ ঘটনাসহ চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে পৃথক ঘটনায় এক নারীসহ সাতজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। আহতদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল রাত ৯ টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন দরবেশপুর গ্রামের মসজিদে ইমাম নিয়োগের কেন্দ্র করে রাজু আহমেদ নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রাজু আহমেদ (৩২) মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নতুন দরবেশপুর গ্রামের খন্দকারপাড়ার মনিরুল ইসলামের ছেলে।
আহত রাজু আহমেদ বলেন, নতুন দরবেশপুর জামে মসজিদের ইমাম নিয়োগকে কেন্দ্র করে এলাকার মাঠপাড়ার মৃত ইসাহাকের ছেলে নিয়াজের সাথে আমার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এসময় নিয়াজ উত্তেজিত হয়ে দেশী অস্ত্র রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনিরা নামের এক গৃহবধূকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে এঘটনা ঘটে। আহত মনিরা খাতুন (১৮) সাতগাড়ি গ্রামের পুরাতনপাড়ার রহমত আলীর স্ত্রী।
আহত মনিরা খাতুন বলেন, প্রতিবেশী শহিদের মেয়ে স্বপ্না খাতুনের নামে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে মিথ্যা অপবাদের দোষারোপ করে আমাকে। এরই জের ধরে গতকাল রাতে স্বপ্না খাতুন ও তার মা শাহানাজ খাতুন আমাকে রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। এতে আমি গুরুতর জখম হয়। পরে আমার পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মাথায় ২টি সেলাই প্রদান করেন বাড়ি পাঠায়।
অপরদিকে, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর মদনা গ্রামে নিজ জমির ওপর গাড়ি যাওয়ার বিরোধের জেরে মাহমুদউল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এঘটনা ঘটে। আহত মাহদুল্লাহ (৪৫) ওই গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
আহত মাহমুদউল্লাহ বলেন, গতকাল বিকেলে ট্যাক্টরে করে জমিতে সার নিয়ে আসছিলাম। পাশাপাশি প্রতিবেশী মসলেমের ছেলে তোতা মিয়ার জমির ওপর দিয়ে ট্যাক্টরটি গেলে আমাকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে তোতা মিয়া। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা হাতিকাটায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন জখম হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে এঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের খালপাড়ার কবির মোল্লার ছেলে রুবেল (২৫), একই এলাকার ইনতাজের ছেলে শিকদার (১৯), ইব্রাহিমের ছেলে খাইরুল (৪৫) ও তার ছেলে সুজন (২৬)
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে রুবেলের নিকট থেকে ৯শ’ টাকা ধার নেই সুজন। এরপর পাওনা টাকা চাইতে গেলে সুজন বার বার ঘোরাতে থাকেন। গতকাল রাতে আবারো সুজনের কাছে পাওনা টাকা চাইতে যায় রুবেল ও তার চাচাতো ভাই শিকদার । এতে রুবেল ও সুজনের তর্কবিতর্ক হয়। এতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িতে পড়ে। এক পর্যায়ে সুজন ও তার পিতা খাইরুল ধারালো অস্ত্র চাপাতি দিয়ে রুবেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও শিকদারকে পিটিয়ে জখম করে। সংঘর্ষে রুবেল ও তার পিতাও আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সৌরভ হোসেন বলেন, রুবেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক মনে হচ্ছে। তার হাতে মারাত্মক কোপের জখম হয়েছে। এছাড়াও বাকিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহৃ আছে। চারজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু জিহাদ খান বলেন, হাতিকাটায় পাওনা ৯শ’ টাকাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। চারজনই হাসপাতালে ভর্তি আছে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ