চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা উদ্বোধন
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বইমেলা সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা চালানোর আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ বই মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলা চলবে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। চুয়াডাঙ্গায় ৪দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় চুয়াডাঙ্গার টাউন ফুটবল মাঠে এ বইমেলার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা-আইসিটি) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশী। উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম’র যুগে ভ্রাম্যমাণ বইমেলা পাঠকদের মাঝে সাড়া না ফেললেও যারা প্রকৃত পাঠক তারা কিন্তু মেলার মাঠে আসবে। কারণ ডিজিটাল প্লাটফর্মে কোন কিছু পড়া আর বইয়ের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে পড়ার মধ্যে যে আনন্দ বা স্বাদ সেটি প্রকৃত পাঠকরাই অনুধাবন করতে পারবে। তাই পাঠকদের অনুরোধ জানাবো ৪ দিনের এই ভ্রাম্যমাণ বইমেলায় সপরিবারে এসে বই পড়ে প্রকৃত পাঠক হিসেবে বই পড়ার গুরুত্ব বাড়াতে। বইমেলার উদ্বোধক নয়ন কুমার রাজবংশী আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে বইমেলার উদ্বোধন শেষে নিজেই স্টল ঘুরে ঘুরে নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে বেশ কিছু বই ক্রয় করেন। তিনি মেলা কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বইমেলা সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা করতে। যাতে করে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণীরা ডিজিটাল প্লাটফর্ম ছেড়ে যেন বই পড়ার প্রতি নিজেদের আগ্রহ জন্মায়। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার কবি-লেখকদের লেখা কোন বই, গল্প, উপন্যাস সংগ্রহ করে একটি বই কর্নার হলে ভালো হতো। তাহলে চুয়াডাঙ্গার তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থীরাও জানতে পারতো তাদের জেলায়ও কবি সাহিত্যিক এবং লেখকরা আছেন বা যারা বই লিখতে পারেন। এই অনুপ্রেরণা থেকে এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বইপড়া ও কবিতা, উপন্যাস কিম্বা বই লেখার প্রতি আগ্রহ জন্মাতো। পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন বলে জানান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের (ভ্রাম্যমাণ বইমেলা) ইউনিট ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা উদ্বোধন হয়েছে। গতকাল বুধবার এ বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ভ্রাম্যমাণ বই মেলার স্টলগুলো। বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলমডাঙ্গায় ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ‘বই মানুষকে সমৃদ্ধ করে। আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে বইয়ের বিকল্প নেই। আমরাও বই পড়ে আজ এই জায়গায় এসেছি। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের বই পড়ার উৎসাহ জোগাতে সহায়তা করছে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এনামুল হক, হাটবোয়ালিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক আসিফ জাহান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সমন্বয়ক তৌহিদ মুসাব, আবির আনাম, কামরুল হাসান কাজল, রাকিব আহমেদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও মেলা পরিচালনা করেন বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী। মেলায় ঢাকা থেকে আসা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি গাড়ি থেকে অনেকগুলো র্যাক নামিয়ে একটি স্টল তৈরি করা হয়েছে। মেলা শেষে র্যাকগুলো আবার ওই গাড়িতে তুলে আরেক জায়গায় মেলা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়াও মেলায় আলমডাঙ্গার স্থানীয় কয়েকটি স্টল রাখা হয়েছে। বইমেলা উদ্বোধনের পর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখেন। এখানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নিজস্ব বই ছাড়াও অন্যান্য প্রকাশনারও বই রয়েছে। এসব বই ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.