চুয়াডাঙ্গায় তারাদেবী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২৫ আসহায় পেলো হুইল চেয়ার
সমাজে পিছিয়ে পড়াদের এগিয়ে নিতে সমর্থবানদের প্রতিবাদ আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার: ‘দিন আনি দিন খাই। এমনও আছে এক বেলা না খেয়েও দিন পার করেছি। তবুও কারোর কাছে কিছুই চাইনি। সরকারিভাবে কখনো কিছুই জোটেনি কপালে। আজ হুইল চেয়ার পেয়ে আমার ছেলেটা খুশিতে আত্মহারা।’ এভাবেই কথাগুলো ব্যক্ত করছিলেন হুইল চেয়ার পাওয়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলতদিয়াড় গ্রামের রুপমের বাবা শাহিন হাসান। চুয়াডাঙ্গায় তারাদেবী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একযোগে ২৫ প্রতিবন্ধীর মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না সিনেমা হল চত্বরে এ হুইল চেয়ারগুলো বিতরণ করা হয়। সভাপতিত্ব করেন তারাদেবী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই)’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাহিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ সাহিদুজ্জামান টরিক।
প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নিজ উদ্যোগে তারাদেবী ফাউন্ডেশন তার স্বর্গীয় মায়ের নামে দিয়েছেন। মূলত মাকে স্বরণ রাখতেই এ প্রতিষ্ঠানটি। এ ফাউন্ডেশন থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের সহযোগিতা, বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, করোনাকালীন সময়ে রোগীদের মাঝে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিনামূল্যে এ ফাউন্ডেশন থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যা প্রশংসার দাবি রাখে। অনেক সময় আমি নিজেও অনেক সাহায্যপ্রার্থীকে এখানে পাঠাই। এভাবেই সামর্থবানদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের পাশে থেকে উদারতা মনের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। তারাদেবী ফাউন্ডেশন মানুষের জন্য কাজ করছে। তারাদেবী ফাউন্ডেশন যেনো এ জেলার প্রতিটি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।
তারাদেবী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, প্রতিবন্ধীদের পেছনে শ্রম দিতে হবে। তারা যেনো পিছিয়ে না থাকে এ জন্য কাজ করে যাচ্ছি তাদের নিয়ে। সমাজে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলে অটো স্কুল ভ্যান প্রদান করেছি। সমাজভিত্তিক পুনর্বাসনের মতো উন্নয়নমূলক কাজ করছে আমার এই ফাউন্ডেশন। এ ধরনের উদ্যোগে আমাদের সবাইকে আসতে হবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলার নান্দবার গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমার ছেলে সিরাজুল ইসলাম জন্ম থেকে শারিরীক প্রতিবন্ধী। কারোর সহযোগিতা ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্যও ছিলো না আমার। আজ আমার ছেলেকে হুইল চেয়ার দিলো ওই স্যারে। অনেক খুশি হয়েছি। এখন থেকে কারোর সহযোগিতা ছাড়ায় ঘোরাঘুরি করতে পারবে।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক কাজী মাসুদুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওয়ায়েচ কুরুনি টিটো, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ, অটিস্টিক স্কুলের পরিচালক কাওসার আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।