চুয়াডাঙ্গায় আইন-শৃঙ্খলাসহ তিন কমিটির সভায় ইউএনও এম সাইফুল্লাহ অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাইফুল্লাহ বলেছেন, অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন স্থানে চুরি রোধে পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে। বাড়াতে হবে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আইন-শৃঙ্খলা, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং গ্রাম আদালত বিষয়ক কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সভার সদস্যরা অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার স্কুলগুলোতে চোরচক্র হানা দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন মসজিদের ব্যাটারিসহ দানবাক্সের তালা খুলে নগদ টাকা চুরি হচ্ছে। এছাড়াও শহরের বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ জানানো হয়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। এছাড়াও ডিউটিরত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোবাইল সেটে আসক্ত না হয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়। অপরদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভায় বিভিন্ন বিষয় গুরুত্বের সাথে আলোকপাত করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাইফুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন স্থানে চুরি রোধে পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি যারা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে যারা অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে তাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নই। ধারাবাহিকভাবে এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া তাদের ব্যাপারে তথ্য দিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আলী হোসেন জানান, পুলিশ চুরি রোধে আগের থেকে এখন অনেক বেশি সচেতন। এছাড়া ডিউটিরত পুলিশ টিমকে ঢাকা হেডকোয়ার্টারসের নির্দেশনা মোতাবেক মোবাইল ব্যবহারে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি চুরি হওয়া বিদ্যুতের তার উদ্ধার করাসহ চোরকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ চোরকে আটক করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি পুলিশ এ ব্যাপারে আরও বেশি সচেতনতার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। এদিকে, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আলমডাঙ্গা উপজেলা সমন্বয়কারী সাইদুজ্জামানের উপস্থাপনায় গ্রাম আদালত নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রাম্য সালিস এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু সেটি আইনসিদ্ধ না। প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চালু আছে। এখানে কোনো আইনজীবী ছাড়াই বাদী-বিবাদী বৈধভাবে প্রচলিত আইনে সুষ্ঠু বিচার পাবেন। গ্রাম আদালতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। এখানে পক্ষগণ নিজের কথা নিজে বলতে পারবেন। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং নৃ-গোষ্ঠী খুব সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পাবেন। এদিকে গ্রাম আদালতে কেউ মিথ্যা মামলা দায়ের, সাক্ষী কর্তৃক সমন অমান্য ও গ্রাম আদালত অবমাননা করলে অভিযুক্তকে জরিমানার বিধান রয়েছে। সভায় গ্রাম আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রচারণা বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়। সভাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা তাসলিমা নাসরিন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মৌমিতা পারভীন, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার নাজমুল হোসেন, উপজেলা আনসার ও ভিডিপির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিন বিনতে আজিজ, প্রেসক্লাব সভাপতি রাজীব হাসান কচি, মোমিনপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আশাদুল হক, বেগমপুর ইউপি প্রশাসক বিল্লাল হোসেন, শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুল আলম সুজন, তিতুদহ ইউপি প্রশাসক আব্দুল আওয়াল, গড়াইটুপি ইউপি প্রশাসক আসিফ ইকবাল, কুতুবপুর ইউপি প্রশাসক নাজমুল হোসেন, মাখালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত সাহা, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস প্রধান অফিসার ইল্লিন সুলতানা, ব্র্যাক কর্মকর্তা মানিক ম্যাক্সিমিলিয়ান রুগা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More