স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদী দখল-দূষণ পরিদর্শন করেছে চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। এই পরিদর্শনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী দুটি বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় প্রায় ৮০জন প্রতিনিধি মাথাভাঙ্গা নদী পরিদর্শন করেন। বেলা ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ পার্কের ঘাট থেকে দুটি নৌকা একসাথে এ নদী পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। মাথাভাঙ্গা নদীতে যাত্রার প্রারম্ভে পুলিশ পার্কে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজহারুল ইসলাম। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় তিনি নদী পরিদর্শনে না যেতে পারলেও সকলকে শুভকামনা জানিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আপনারা নদীর বর্তমান চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরবেন। আমরাও চাই মাথাভাঙ্গা নদী নাব্যতা ফিরে পাক। এরআগে মাথাভাঙ্গা নদীতে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান করে কোমর তুলে দেয়া হয়েছে। মাথাভাঙ্গা নদীকে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁচাতে হবে।
এরপর প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, সংবাদকর্মী, পরিবেশবিদ, এনজিও, রাজনৈতিক ব্যক্তি, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার ৮০জন প্রতিনিধিকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। এ যাত্রায় নেতৃত্ব দেন মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী।
দুটি বড় নৌকার বহর নিয়ে সংগঠনটি মাথাভাঙ্গা নদীর চুয়াডাঙ্গা অংশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বিকেলে আবার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ পার্কে এসে পৌঁছায়। দিনব্যাপী নদী পরিদর্শন শেষে বিকেলে চুয়াডাঙ্গা কোর্ট রোডে মাথাভাঙ্গা নদীর দখল-দূষণ বন্ধ করা, নদীর অবাধ প্রবাহ ও নৌ-চলাচলের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করার দাবিতে এক মানবন্ধন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধন ও নৌকায় মাথাভাঙ্গা নদী পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলিম, মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা অ্যাড. সেলিম উদ্দীন খান, মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির উপদেষ্টা ও দৈনিক সময়ের সমীকরণের প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, উপদেষ্টা অ্যাড. বজলুর রহমান, মাথাভাঙ্গা নদী বাচাঁও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, সহসভাপতি শাহ আলম সনি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মানিক আকবর, অ্যাড. শরিফ উদ্দীন হাসু, উদীচী চুয়াডাঙ্গার সাধারণ সম্পাদক হাবিবি জহির রায়হান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, দৈনিক সময়ের সমীকরণের বার্তা সম্পাদক হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী নিশান আহমেদ, বকুল আহমেদ, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, মাথাভাঙ্গা নদী বাচাঁও আন্দোলনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিন সুলতানা মিলি, সহ-সম্পাদক হেমন্ত কুমার সিংহ রায়, প্রচার সম্পাদক মেহেরাব্বিন সানভী প্রমুখ।
মানববন্ধনে মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী বলেন, মাথাভাঙ্গা নদী দখল ও দূষণ দেখার উদ্দেশ্য নিয়ে মাথাভাঙ্গা নদী পরিদর্শনের আয়োজন করা হয়। পরিদর্শনে জেলা প্রশাসনের ভূমি সংশ্লিষ্ট একজন প্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি খুলনার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৮০ জন প্রতিনিধি দিনব্যাপী আমরা মাথাভাঙ্গা নদী পরির্দশন করেছি।
মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী আরো জানান, শিগগিরই পরিদর্শনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন নদ-নদী সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। আমরা দেখেছি মাথাভাঙ্গা ভালো নেই। দখল হয়ে যাচ্ছে। দূষণ করা হচ্ছে। পাড় ভেঙে যাচ্ছে। কোমড় দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এই নদী না বাঁচলে চুয়াডাঙ্গার কোনো নদী বাঁচবে না। চুয়াডাঙ্গাকে বাঁচাতে হলে মাথাভাঙ্গাকে বাঁচাতে হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ