বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের অর্থায়নে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের মাঝে ঈদ উপহার হিসাবে হুইলচেয়ার বিতরণ করেছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। এসময় প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধীরা অবহেলা-অনাদরে তাদের জীবন কাটায়। পরিবার থেকে শুরু করে আতœীয়-পরিজন, প্রতিবেশী সবাই তাদের খাটো করে দেখে থাকেন। সমাজের বাকি সদস্যদের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপনের কথা থাকলেও তারা সব অধিকার থেকে বঞ্চিত। জীবনের প্রতিটি ধাপে তাদের অবহেলার চিত্র ফুলে ওঠে। তারা যদি নারী হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের সারাজীবন ভোগ করতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক ও সামাজিক সম্মানহানির ভয়ে অনেক মা-বাবা নিজের সন্তানকে বিশেষ চাহিদাস¤পন্ন ব্যক্তির তালিকাভুক্ত করতে চান না। সব ক্ষেত্রেই তারা বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে। এ বৈষম্যই তাদের সমাজ থেকে ধীরে ধীরে দূরে ঠেলে দেয়। এর ফলে তারা সমাজের বাকি দশজনের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। সমাজের বিশেষ চাহিদাস¤পন্ন ব্যক্তিদের অধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। অথচ প্রতিবন্ধিতা মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে কেউ এর শিকার হতে পারে। বিশেষ চাহিদাস¤পন্ন মানুষদের জীবনমান ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। তাদের প্রতিবন্ধী হিসেবে নয়, দেখতে হবে মানুষ হিসেবে। পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। যে যেই কাজে পারদর্শী, তাকে সেই কাজে লাগাতে হবে। তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা আমাদের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব। আর এসব দায়িত্ব পালন করতে পারলে এবং তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দিতে পারলে তারা স¤পদে পরিণত হয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে । তিনি আরও বলেন, মনেরাখতে হবে প্রতিবন্ধিতা কোন রোগ নয়। তাই যাদের স্বাভাবিক কাজের ক্ষমতা নাই তাদের প্রতি করুনা নয়, সহযোগিতার মনোভাব পোষন করতে হবে। শুধু সরকার নয়, দেশের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের অক্ষমতা না দেখে তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে হবে। তারা বোঝা নয় বরং সহযোগিতা পেলে তারাও দেশের স¤পদে রূপান্তরিত হতে পারে। এজন্য ব্যক্তি ও সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তন জরুরি। তাদের বাদ দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব না। ইউপি সচিব আসাবুল হক মাসুদের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলেটর সরোয়ার হোসেন, ইউপি সদস্য আক্কাচ আলী, আলী কদর, আবুু সালেহ, জিল্লুর রহমান, কায়েস উদ্দিন, আমিনুল ইসলরাম, আবুবাক্কা, আসলাম উদ্দিন প্রমুখ । আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি ১২ জন প্রতিবন্ধীদের মধ্যে হুইল চেয়ার ও ৭০ টি সমজিদের ঈমামদের হাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী তুলেদেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ