চুয়াডাঙ্গার দর্জিপাড়ায় বেড়েছে ব্যস্ততা : দম ফেলানোর ফুরসত নেই

এবার বেড়েছে কাপড় সেলাইয়ের মজুরি : বেশির ভাগ দোকানে অর্ডার বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদ যতোই ঘনিয়ে আসছে, চুয়াডাঙ্গায় দর্জির দোকানগুলোতে ততোই বাড়ছে ব্যস্ততা। দর্জিদের এখন যেন দম ফেলানোর ফুরসত নেই। রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে অধিকাংশ দর্জি নতুন করে আর কোনো অর্ডার (ফরমায়েশ) নিচ্ছেন না।

এদিকে ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার কাপড় সেলাইয়ের মজুরি বেড়ে গেছে। প্রতিটি পোশাকে আগের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে তাদের। তবে দর্জিরা দাবি করছেন, পোশাক তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও তারা মজুরি আগের মতোই নিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সমবায় নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়, কাপড়ের দোকান থেকে পছন্দের সিট কাপড় কিনে দর্জির দোকানে ছুটছেন ক্রেতারা। এর মধ্যে নারী ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। কাপড় সেলাইয়ের জন্য কেউ মাপ দিচ্ছেন, আবার কেউ সিরিয়াল পেতে দোকানের সামনে অপেক্ষা করছেন। কোনো কোনো দোকানের সামনে ‘অর্ডার বন্ধ’ লেখা পোস্টার সাঁটাই করে দেয়া হয়েছে। আবার ক্রেতাদের অনেক অনুরোধের পর দর্জিরা অর্ডার নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিউমার্কেটের এক দর্জির দোকান থেকে ফেরার পথে কথা হয় গৃহিণী উম্মে হাবীবার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কী যে অবস্থা! কোনো অর্ডারই নিতে নিতে চাচ্ছিলো না। অনেক বোঝানোর পর অর্ডার দিতে পেরেছি।’ এই মার্কেটের ভিআইপি টেলার্সের মালিক আজাদ রহমান বলেন, ‘রোজার প্রথম সপ্তাহ থেকেই অর্ডার নেয়া বন্ধ। তারপরও অনেকের অনুরোধ ফেলা যায় না। আমার এখানে কারিগরেরা দিন-রাত কাজ করেও শেষ করতে পারছেন না। শেষমেশ কী হবে, জানি না, খুব চাপে আছি।’

কাপড় সেলাই করতে আসা একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, এ বছর সেলাইয়ের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন দর্জিরা। কলেজছাত্রী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, সালোয়ার-কামিজ সেলাইয়ের মজুরি বেড়েছে। আগের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। গত বছর তিনি জর্জেট কাপড়ের থ্রি-পিস সেলাই করিয়ে নিয়েছিলেন ৪০০ টাকায়। এ বছর তা ৫০০ টাকা নেয়া হয়েছে। কলেজছাত্র মাহবুবুজ্জামান রিয়াদ বলেন, গত ঈদে তার পাঞ্জাবি সেলাই করে নিতে খরচ হয়েছিলো ৪০০ টাকা। এবার তা ৫৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে।

তবে সমবায় নিউ মার্কেটের মিতা টেইলার্সের পরিচালক হালিমা খাতুনের দাবি, সেলাইয়ের মজুরি আগের মতোই আছে। সাধারণ সালোয়ার কামিজ বা থ্রি-পিসের সেলাই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। এ বছর নারীদের লং ফ্রকের চাহিদা বেশ। লং ফ্রকের মজুরি ৬০০ টাকা। এছাড়া গারারা ৬০০ টাকা ও লেহেঙ্গা সেলাইয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

ছেলেদের পোশাক সেলাইয়ের প্রতিষ্ঠান ডালাস টেইলার্সের ব্যবস্থাপক আলতাফ হোসেন বলেন, বর্তমানে দৈনিক ১৮জন কারিগর মেশিনে কাপড় সেলাই করছেন। এছাড়া পাঁচজন তাদের সহযোগিতা করছেন। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাদের এখন হিমশিম অবস্থা। প্রতি ঈদের মতোই এবারও পায়জামা-পাঞ্জাবির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি পাঞ্জাবি ৫৫০ টাকা, পায়জামা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, ফুলপ্যান্ট ৬০০ টাকা ও শার্টের মজুরি ৫০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। তবে আলতাফ হোসেনের দাবি, এবার পোশাক তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। তবে খরচ বাড়লেও এখনো মজুরি বাড়ানো হয়নি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More