গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর গ্রামের বালির মাঠে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। রায়পুর গ্রামের বাবুল আক্তার নামে একজন এই বালু উত্তোলন করছেন। তিনি নিজের জমিতে বালু উত্তোলন করলেও পাশাপাশি জমির মালিকেরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। বালু উত্তোলনের ফলে জমি ধ্বসে পড়ায় অনেকেই বালু উত্তোলনকারীর নিকট জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাইপুর-এলাঙ্গি সড়কের পাাশে কেএবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ একটি ইপিলিপি বাগানের সংলগ্ন পুকুরে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। স্কেবেটর যন্ত্রের সামনে অব্যহত বালু উত্তোলন করায় পাশের আবাদি জমি ধসের মুখে পড়েছে। এই মাঠের জমি তিন ফসলী জমি হিসেবে চিহ্নিত। তাই ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় অনেক চাষি জমি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, বাবুল আক্তার রাইপ্রু গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। স্থানীয় পেশিশক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তির ছায়াতলে রয়েছেন তিনি। ফলে গ্রামের দরিদ্র চাষিরা জমি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়লেও প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। তাই নির্বিঘেœ বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে যাচ্ছে বাবুল আক্তার। জানা গেছে, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এভাবে বালু উত্তোলন করে পুকুর খনন করা দ-নীয় অপরাধ। অথচ প্রকাশ্যেই বাধাহীনভাবেই বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। জানা গেছে, বালু উত্তোলন করে এক একর জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। ১৫ ফুট গভীর করে পুকুর খননের নামে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে মাটি। পুকুরের পাশের জমি কয়েক জায়গায় ধ্বসে পড়েছে। যদিও বালু উত্তোলনকারী বাবুল ধ্বসে পড়া জমির উপর বালু দিয়ে ভরাট করেছেন তারপরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই জমিগুলো। ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার গাড়ি বালু বিক্রয় করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুকুরের পাশের কয়েকজন জমির মালিক জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ও পাশের জমির মালিকদের নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ফলে অনেকেই ভয়ে কোথাও অভিযোগ করতে পারছেন না। আবার অভিযোগ করলেও স্থানীয় সচিব ও ভূমি অফিস কোন প্রতিকার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। বালু উত্তোলনকারী বাবুল আক্তার জানান, তিনি ভূমি অফিসকে অবহিত করে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করছেন। এতে কারো কোন ক্ষতি হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেছেন। ভূমি অফিস থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেও তিনি কোন অনুমতি পত্র দেখাতে পারেননি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ