গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর-২ আসনের অন্তর্গত গাংনী উপজেলা শহরে প্রচারণা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে নৌকার প্রচারের অভিযোগ ও প্রতিবাদ জানান স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা। এই নিয়ে দু পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান নিলে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিত-া ও মারমুখী অবস্থানের কারণে সেখানে জড়ো হতে থাকেন উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে বড় ধরনের সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
জানা গেছে, গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের ব্যক্তিগত গাড়ী বাসস্ট্যান্ডের কাছে ছিলো। গাড়ির সামনে বাঁধা ছিলো নৌকা প্রতীকের একটি ফেস্টুন। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনী বিধিমালা লঙ্ঘন করে গাড়ীতে কেন ফেস্টুন বাঁধা আছে তার প্রতিবাদ জানান স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেনের ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় বাগবিত-তা ও তীব্র উত্তেজনা। উভয়পক্ষের লোকজন জড়ো হতে থাকে। বিষয়টি গড়ায় সংঘর্ষের পর্যায়ে। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে সহকারী রির্টার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তলব করা হয় উভয়পক্ষের লোকজনকে।
গাংনী উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির অভিযোগ করেন, গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের ব্যক্তিগত গাড়ীতে নৌকা প্রতীকের ফেস্টুন নিয়ে প্রচারণা করছিলেন। প্রচার প্রচারণা বন্ধের সময় পেরিয়ে গেছে তাই বাঁধা দেয়া হয়। এতে সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম আমাদের ওপর আক্রমণ করে।
এদিকে পাল্টা অভিযোগ করে সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি একটি জানাজা নামাজে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। গাড়িতে যে ফেস্টুন বাঁধা ছিলো তা স্মরণ ছিলো না। শ্রমিকলীগ নেতা মনিসহ অন্যরা এসে বাধা দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা এসে যা করার করবেন তারা কেন আমাকে বাধা দিচ্ছে। এমন প্রশ্ন করতেই তারা আমার ওপরে আক্রমণ করে।
এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করার পর গাংনী উপজেলার সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম ও শ্রমিক লীগ নেতা মনিকে তার কার্যালয়ে তলব করেন। সেখানে বিজিবি কর্মকর্তা, গাংনী থানার ওসি ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের সাথে শুনানি করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।
শুনানিতে একে একে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. আবু সালেহ মো. নাজমুল হক সাগর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেনসহ উভয়পক্ষের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সহকারী রির্টার্নিং কর্মকর্তা প্রিতম সাহা বলেন, এ নির্বাচনকে সুষ্ঠু সুন্দর করতে আমাদের যা কিছু করার তাই করবো। উভয়পক্ষকে বলেছি তাদের যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সেটি আমাদেরকে জানাবে। কেউ কারও সাথে বিরোধে জড়াবেন না। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সাথে সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবেন সেটি বলেছি। তাছাড়া সকল নেতাকর্মী ও ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলছি এই নির্বাচনটি উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনের জন্য আমরা আপাদের সকলের সহযোগিতা চায়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.