গাংনীতে তিন ফসলি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণ : চাষিদের তীব্র প্রতিবাদ 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে ফসলের জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করছেন এক ব্যবসায়ী। এতে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। খাদ্য ফসল উৎপাদনের বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কায় প্রতিবাদী হয়ে উঠছেন তাই চাষিরা। অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে গতকাল সোমবার গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিবাদী অবস্থান ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগী হতে যাওয়া এসব কৃষকরা।

গতকাল সোমবার সকালে সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির মালিকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান। চাষিদের এ দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। নেতৃবৃন্দ চাষিদের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় চাষিরা স্মারকলিপি প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।

চাষিরা জানান, থানাপাড়ার পরে বোলালিয়া মাঠে থানাপাড়ার মোমিন নামের এক ব্যক্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজলের সহযোগিতায় ইটভাটা নির্মাণের প্রক্রিয়া করছেন। সেখানে গেল কয়েকদিন ধরে ইট ফেলা হচ্ছে। চাষিরা তাদের নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করছেন না ইটভাটা স্থাপনকারীরা।

গাংনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুল ইসলাম জানান, গাংনী পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের বেশিরভাগ মানুষের আবাদ এই বোয়ালিয়া মাঠে। এখানে ইটভাটা নির্মাণ করা হলে ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আবাদ বন্ধ হলে এ অঞ্চলের মানুষের খাদ্যের চাহিদায় বিরাট প্রভাব পড়বে। তাই ইটভাটা নির্মাণ বন্ধ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

জানা গেছে, গাংনীর বোয়ালিয়া মাঠ এলাকা এ অঞ্চলের মানুষের আবাদের জন্য সবচেয়ে বড় ফসলি মাঠ। এখানে গাংনী থানাপাড়া, বাজারপাড়া, ভিটাপাড়া ও ধানখোলাসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ খাদ্য ফসল আবাদ করেন। তিন ফসলি আবাদি জমি হিসেবে এই মাঠ চাষিদের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে আছে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, আমার বরারব একটি আবেদন দিয়েছেন এলাকাবাসী। আবেদনটি গ্রহণ করেছি এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, ইটভাটা স্থাপনকারীদের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এখানে ইটভাটা করবে না মর্মে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরপরও যদি তারা ইটভাটা স্থাপন করতে  চায় তাহলে  আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে।

গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী বলেন, ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন দ-নীয় অপরাধ। চাষিদের দাবির সাথে আমরা একমত পোষণ করেছি। বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউএনকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ^স্ত করেছেন।

গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, জনগণের ক্ষতি করে কেউ ইটভাটা স্থাপন করতে পারবে না। আমরা জনগণের পক্ষে। তাছাড়া ইটভাটার কালো ধোয়ার ফলে পরিবেশ ও পার্শ্ববর্তী জমির ফসল নষ্ট হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More