গাংনীতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের শীতকালীন সবজির পসরা : পণ্য আছে ক্রেতা নেই
লোকসান এড়াতে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সবজির আবাদ করার পরামর্শ
মাজেদুল হক মানিক: সামনে সাজানো শীতকালীন সবজির পসরা। গালে হাত দিয়ে চিন্তায় মগ্ন সবজি চাষি মনিরুল ইসলাম। মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামের চাষি কামরুল ইসলাম নিজের আবাদকৃত সবজি বাজারে বিক্রি করেন। তবে গেল কয়েক হাট এভাবেই গালে হাত দিয়ে চিন্তায় থাকতে হয় ক্রেতার আশায়। গতকাল শনিবার দুপুরে গাংনীর সাপ্তাহিক হাটে মনিরুলের মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এভাবেই বসে ছিলেন। সবজি বিক্রেতা কামরুল ইসলাম জানান, তিনি সারা বছরই নিজের জমিতে সবজি আবাদ করে নিজেই বিক্রি করেন। এতে তার লাভ একটু বেশি হয়। পালংক শাক প্রতি কেজিতে ৫ টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। বাঁধাকপি বিক্রি করতে হচ্ছে ২-৫ টাকা কেজিতে। যা বিক্রি করে ক্ষেতের ফসল তোলার খরচই হচ্ছে না। গতকাল শনিবার জেলার হাটবাজারগুলোতে ১০০ টাকা মিলছে ৫ কেজি আলু। বেগুন, টমেটো, লাউ রয়েছে ২০ টাকার মধ্যে। বাঁধাকপি ও ফুলকপি গেল সপ্তাহের মতই বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৫ টাকা কেজি এবং প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। ক্রেতারা কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দিলেও বাজারে অবশিষ্ট থেকে যাচ্ছে শীতের শাকসবজি। প্রতিদিন যে পরিমাণ সবজি আমদানি হচ্ছে সে তুলনায় ক্রেতার চাহিদা অনেক কম। ফলে কৃষকের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও লোকসানের মুখে পড়েছে। তবে ক্রেতাদের মনে স্বস্থি দেখা দিলেও সারা বছর নিয়ন্ত্রিত দর নিশ্চিত করার দাবি তাদের। সবজি ক্রেতা জিল্লুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সামান্য পরিমাণ পেঁয়াজ, আলু ও সবজি কিনেছি। এখন কিনছি ব্যাগ ভরে। তবে বাজারে প্রচুর আমদানি তাই প্রচুর কেনার পরেও সংকট হচ্ছে না। তবে চাষির লোকসানের কথা চিন্তা করে ক্রেতা হিসেবেও আমরা স্বস্থি পাচ্ছি না। শীতে কম মূল্য এবং অন্য সময় চড়া মূল্য থাকে। এই ব্যাস্থাপনা আমরা চায় না। আমরা চায় সব সময় বাজার একটা নিয়ন্ত্রণ অবস্থা থাককু। যাতে কৃষকও বাঁচবে এবং ক্রেতাদেরও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। সবজি বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম ও হালিম হোসেন জানান, পাইকারী বাজার থেকে কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে আলু এবং সবজি। তবে হাটে বিপুল পরিমাণ আমদানী থাকায় ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, আমদানির ওপর কাঁচা সবজির দর নির্ভর করে। এবার একসাথে সারা দেশেই বিপুল পরিমাণ সবজি উঠেছে। তাই দর এত নিচে নেমেছে। লোকসান এড়াতে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সবজির আবাদ করার জন্য চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.