গণসমাবেশে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনার পথে নেতা-কর্মীরা
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর থেকে ভাড়ায় যাচ্ছে না বাস-মাইক্রোবাস
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে ভাড়ায় বাস ও মাইক্রোবাস পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। ফলে তারা বাধ্য হয়ে ট্রেনে কিংবা বিকল্প ব্যবস্থায় গণসমাবেশের অভিমুখে ছুটছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ অভিযোগ করেন, চুয়াডাঙ্গায় অসংখ্য বাস ও মাইক্রোবাস থাকলেও বিএনপির খুলনার কর্মসূচির জন্য কোনো গাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়নি। তবে দলীয় নেতাদের মালিকানাধীন ৬০টি মাইক্রোবাস ও ১২৫টি মোটরসাইকেলে করে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আলাদা আলাদাভাবে খুলনার পথে রওনা দিয়েছেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে এক হাজার জন ইতোমধ্যেই খুলনায় পৌঁছে গেছেন। যাদের প্রত্যেকের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার আছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে সোহেল ও আরএ পরিবহনের চারটি বাস প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে ১৫ মিনিট পরপর খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সাতক্ষীরার একটি সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও তার স্ত্রীর কর্মস্থল চুয়াডাঙ্গা থেকে সপ্তাহে একদিন সকালে এসব পরিবহনে খুলনায় যান। শুক্রবার সকালে খুলনায় যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে গেলে কাউন্টার মাস্টার সাজেদুল ইসলাম লাভলু তাকে জানিয়ে দেন যে বাস খুলনায় যাবে না। যশোর পর্যন্ত যেতে পারে। খুলনাগামী অন্য যাত্রীদেরও কাউন্টার মাস্টার একই কথা বলেন। খুলনায় বাস না যাওয়ার কারণ নিয়ে এই কাউন্টার মাস্টার পরিষ্কার করে কিছু না বললেও যাত্রীদের আলাপ-আলোচনায় চলে আসে খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশের কথা। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে টিকিট কেটে যশোরের উদ্দেশে রওনা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে ঢাকা-যশোর পথে চলাচলকারী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত যান। যশোর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের খুলনায় নেয়া হচ্ছে। সকাল সোয়া ৯টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে দলীয় নেতা-কর্মীরা খুলনার উদ্দেশে রওনা দেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো, জেলা থেকে অন্তত ২ হাজার ৫০০ নেতা-কর্মী খুলনায় শনিবারের গণসমাবেশে যোগ দেবেন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, সব প্রস্তুতি শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ব্যানার ও জাতীয় পতাকা নিয়ে খুলনার পথে রওনা দিয়েছেন। তবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রধান ভরসা ট্রেন। বেশির ভাগ নেতা-কর্মী ট্রেনে করে রওনা দিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, দুই দিন ধরে খুলনাগামী ট্রেনে যাত্রীর চাপ অনেকটাই বেড়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে ১২০ সদস্যের নেতা-কর্মী ১০টি মাইক্রোবাসের একটি বহর নিয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনার পথে রওনা দেন। দুপুরে বহরটি যশোর শহরের পৌঁছায়। শরীফুজ্জামান বলেন, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের লোকদের হয়রানির আশঙ্কায় গাড়ির বহর ভাগ হয়ে বিশেষ কৌশলে যশোর থেকে খুলনা পর্যন্ত যাবেন। আজ (গতকাল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার একাডেমি মোড়ে মাইক্রোবাস ও কার স্ট্যান্ডে গিয়ে অসংখ্য মাইক্রোবাস দেখতে পাওয়া যায়। মাইক্রোবাসের অন্তত ২০ জন চালকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনা পর্যন্ত পথে পথে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ও পুলিশের হয়রানির ভয়ে গণসমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ভাড়ায় যাবেন না।
জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দীন মুক্তা বলেন, খুলনায় শুক্রবার ও শনিবার পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে। এ জন্য চুয়াডাঙ্গার পরিবহন মালিক-শ্রমিকের কেউই বাস খুলনায় পাঠাতে চান না। একই কথা বলেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিপন ম-ল।