ঝিনাইদহের মহেশপুর পল্লি বাকশপোতায় শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার
মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা থেকে শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘরের ভেতর খাটের ওপর ৬ বছর বয়সী ছেলের লাশ পড়েছিলো। আর গলায় শাড়ি পেঁচানো অবস্থায় মায়ের লাশ ঝুলছিলো ঘরের আড়ায়। গতকাল শনিবার ভোররাতে উপজেলার নেপা ইউনিয়নের বাকশপোতা গ্রাম থেকে মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃতরা হলেন ওই এলাকার আল মামুনের স্ত্রী রিফা খাতুন (২৮) ও তার ছেলে রাব্বি (৭)।
প্রতিবেশীরা জানায়, বিয়ের আগে থেকে রিফা মানসিক রোগী ছিলেন। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। কিন্তু রিফার শিশুটিকে সহ্য করতে পারতেন না। শিশুটিকে তার বাবাই দেখভালো করতেন। কয়েকদিন আগেও রিফা ছেলেকে আছাড় মেরে হত্যার চেষ্টা করেন। এরপর রিফাকে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কয়েকদিন আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। ওই ঘটনার পর থেকে শিশু রাব্বি তার বাবার সঙ্গে ঘুমাতো। শুক্রবার রাতেও রাব্বি তার বাবার সঙ্গে ঘরের বারান্দায় ঘুমায়, রিফা এ সময় ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ২টার দিকে মামুন গরুকে খাবার দিতে ঘুম থেকে ওঠেন। এ সময় ছেলেকে পাশে না পেয়ে বাড়ির লোকজনদের ডাক দেন। পরে একটি ঘরে খাটের ওপর ছেলের ও ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় স্ত্রীর লাশ দেখতে পান। পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
রিপা খাতুনের স্বামী মামুন জানিয়েছেন, ঘরের ভেতর রিপা ও ছেলে ঘুমিয়ে ছিলেন। গরু পাহারা দেয়ার জন্য তিনি বারান্দায় ঘুমান। ভোরে ঘুম ভেঙে তিনি ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করেও কোনো সাড়া পাননি। পরে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখতে পান, খাটের ওপর রাব্বির নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। আর ঘরের আড়ায় গলায় শাড়ি পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে রিপার দেহ।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোর্শেদ হোসেন খান বলেছেন, সকালে তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা যাচ্ছে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ছেলে রাব্বিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মা রিপা খাতুন ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরও বলেন, মৃত রিফা খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে। এর আগেও মৃত রিফা খাতুন ছেলেকে আছাড় দিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এরপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।