দর্শনা অফিস: আজ ৮ মার্চ কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ। ইউনিয়নের ১৩ পদের বিপরীতে ভোট যুদ্ধে ৩০ জন প্রার্থী লড়াই করলেও মূল পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ দুটি পদে চেয়ার পেতেই যতো জল্পনা-কল্পনা ও কায়দা-কৌশল। এবারের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। এ ৪ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরাই ভোটের মাঠ গরম করে রাখেন বরাবরই। বাকি প্রার্থীরা তাদের সাথে গা ভাসিয়ে নির্বাচনীর বৈতরনী পার করেন। এবারের নির্বাচন শুরুর দিকেই পুরোনো জুটির খুটিতে ধরে ঘুন। শেষ অবধি ঘুনে ধরা খুটি ধ্বসে গেছে? ভোটের আগের রাত পর্যন্ত পুরোনো ওই জুটির মধ্যে কোনো প্রকার সমঝোতার আভাস পাওয়া যায়নি। পুরোনো দুজনই আলাদাভাবে অপর ২ প্রার্থীর সাথে গোপনে জোট অঘোষিত প্যানেল বদ্ধের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত প্যানেলভুক্ত হচ্ছে কিনা তা পরিষ্কার বোঝা যাবে আজ ভোটের শেষ সময় পর্যন্ত। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ভোট কেন্দ্রেও বিশেষ সংকেত ও চোখের ইশারায় প্যানেলভুক্ত হওয়ার নজির রয়েছে অহরহ। ভোটারদের মধ্যে জোর গুঞ্জন উঠেছে, এবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান নির্বাচিত হলে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সকল রেকর্ড ভেঙে ৮ বারের মতো সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসবেন। মাসুদুর রহমানের সাথে সভাপতি প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ সবুজ গোপনে প্যানেল হচ্ছে বলে যেমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তেমনিভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে বর্তমান সভাপতি তৈয়ব আলীর সাথে গোপন প্যানেল হতে পারে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্সের। এ ব্যাপারে সভাপতি প্রার্থী তৈয়ব আলী, ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাসুদুর রহমান ও মনিরুল ইসলাম প্রিন্স অভিন্ন ভাষায় জানিয়েছেন, তারা কেউ কোন প্যানেলভুক্ত হয়নি ও হচ্ছে না। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে তৈয়ব আলী (চাঁদতারা), ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ (হারিকেন), সাধারণ সম্পাদক পদে মাসুদুর রহমান মাসুদ (বাইসাইকেল) ও মনিরুল ইসলাম প্রিন্স (ছাতা) প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে লড়ছেন। এখনো পর্যন্ত যে যার মতো শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বলেও মন্তব্য তাদের। প্রত্যেকেই নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি। কমিটির অন্যান্য পদের মধ্যে রয়েছে সহসভাপতি, সহসম্পাদক ও ও ৭টি ওয়ার্ডে ৯ জন সদস্য। কমিটির সহসভাপতি পদে বর্তমান সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান (চেয়ার), সাবেক সহসভাপতি ফারুক আহমেদ (মোরগ), এএসএম কবির (হাতপাখা) ও আবু সাঈদ হোসেন (মাছ), সহসাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সহসাধারণ সম্পাদক খবির উদ্দিন (কাপ-পিরিচ), ইসমাইল হোসেন (তালাচাবী), একরামুল হক খলিল (ফুটবল) ও আকরাম আলী (কলস) প্রতীক পেয়েছেন। তাছাড়া ৭টি ওয়ার্ডের ৯ জন সদস্য পদের বিপরীতে ১৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ১নং ওয়ার্ডে প্রশাসন, সংস্থাপন, ভূমি, বাণিজ্যিক শাখা, প্রধান স্টোর, মসজিদ, ওয়েব্রিজ, ইমারত, গোপন শাখা, চোলাই বিক্রয় শাখা, স্বাস্থ্য বিধান, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, জেনারেল, টুলস স্টোর, হিসাব বিভাগের সকল শাখা, কৃষি খামার অফিস, কারখানা করণীক ও ওষুধ কারখানায় ভোটার সংখ্যা ১০১ জন। সদস্য পদে সেলিম খান (বালতি) ও সালাউদ্দিন শাহ সনেট (ডাব), ২নং ওয়ার্ডে চোলাই কারখানার সকল শাখা, সকল পণ্যাগার, ডিস্টিলারী (ভান্ডার), ঢাকা ও চট্রগ্রাম বিক্রয় অফিসে ভোটার সংখ্যা ১৪৬ জন। সদস্য প্রার্থী বাবর আলী (বেলচা) ও আমিনুল ইসলাম (ডাব), ৩নং ওয়ার্ডে পরিবহন বিভাগ, কৃষি খামার পরিবহন চালক-হেলপার ও মেইন্টটেন্স শাখায় ভোটার সংখ্যা ১৭২ জন। সদস্য পদে শরিকুল ইসলাম (টর্চলাইট) ও শফিকুল ইসলাম (ডাব)। ৪নং ওয়ার্ডে ইক্ষু সংগ্রহ অফিস, পিসি, সেন্টার গার্ড কাম স্কেলম্যান, পিডি, কেন আউট স্টেশন গার্ড, এলডিএ, কেন ক্যারিয়ার সুপার ভাইজারে ভোটার সংখ্যা ১২৪ জন। সদস্য পদে ইয়ামিন হক (আখের আঁটি) ও মতিয়ার রহমান (ডাব), ৫নং ওয়ার্ডে সকল সিডিএ, সিডিএ কাম সিআইসি, আকন্দবাড়িয়া পরীক্ষামূলক খামার, সকল কৃষি খামারের করণীক, ফিল্টম্যান, সুপার ভাইজার, পাম্পচালক, পূর্জি রাইটার ও ক্রয় করণীকে ভোটার সংখ্যা ১০৫ জন। সদস্য পদে সাইফুদ্দীন (ডাব) ও হারিজুল ইসলাম (আখের আঁটি)। ৬নং ওয়ার্ডে উৎপাদন বিভাগ, সুগার ল্যাবটারি, টাটা এন্ট্রি বিদ্যুৎ বিভাগে ভোটার ২৩০ জন। ২টি সদস্য পদে হাফিজুর রহমান (বেলচা), মজিবর রহমান (ডাব), নুরুল ইসলাম (আখেরআটি) ও মোহন আলী (হাতুড়ি)। ৭নং ওয়ার্ডে প্রকৌশল, মিল হাউজ, বয়লিং হাউজ, বয়লার, টার্বাইন ও ওয়ার্কসপ শাখায় ভোটার সংখ্যা ২১০ জন। ২টি সদস্য পদে আজাদ আলী (হাঁতুড়ী), জহিরুল ইসলাম (আখের আটি), মফিজুর রহমান (বেলচা) ও ইদ্রিস আলী (কাঠাল) প্রতীকে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের ভোটে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) রাব্বিক হাসান, সদস্য সচিব, মিলের মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারী) ফিদা হাসান বাদশা, সদস্য উপ-ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আবদুল ফাত্তাহ, উপ-ব্যবস্থাপক (পরিঃ প্রকৌশলী) আবু সাঈদ ও জুনিয়র অফিসার (ভূমি) জহির উদ্দিন। এদিকে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এরই মধ্যে ১০৮৮ ভোটের মধ্যে অবসর জনিত কারণে ১ ভোট কমে দাঁড়িয়েছে ১০৮৭ জনে। কেরুজ সাবেক উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ৯টি কক্ষে ১০টি বুথে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সকাল ৯ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ভোট কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ