মুর্শিদ কলিন: নারী উদ্যোক্তা হেলেন আক্তার কামনা। স্বত্বাধিকারী ‘ড্রিম কেক হাউজ’। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স কমপ্লিট। বিজনেস এর বয়স পাঁচ বছর। স্বামীর নাম এহসানুল কবির। একছেলে নাম ওয়াসিফ নিয়াজ। ঠিকানা ‘জাহান মঞ্জিল’ মাদরাসাপাড়া, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা। ৩জন নারী উদ্যোক্তাকে কাজ করার জন্য নিয়োগ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তার কাজের ফল স্বরুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ফাউন্ডেশন এবং সরকারি বেসরকারি ভাবে ইতিমধ্যেই ১৫টি সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০২২ সালে বেগম রোকেয়া দিবসে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়ে পুরুষ্কার অর্জন। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরষ্কৃত হওয়ার ফল স্বরুপ আলমডাঙ্গা উপজেলা উদ্যোক্তা টিমের পক্ষ থেকে বিশাল সংবর্ধনার আয়োজন করে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়। ২০২৩ সালে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখায়, মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ ও জাহানারা যুব মহিলা সংস্থা থেকে পেয়েছেন অনুপ্রেরণামূলক স্মারক। ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে চুয়াডাঙ্গা লাইফ লাইন ও উই সিডি গ্রুপ থেকে সফল নারী আত্মকর্মী ক্যাটাগরীতে পেয়েছেন পুরুষ্কার। ২০২৫ সালে জাহানারা যুব মহিলা সংস্থা থেকে সফল আত্মকর্মী ক্যাটাগরিতে অদ্বিতীয়া নারী উদ্যোক্তা এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলা পিঠা মেলাতে ‘আমার স্টল’ দ্বিতীয় হওয়ায় পেয়েছেন পুরস্কার। অনলাইন এবং অফলাইনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিকবার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন পাবলিক গ্রুপ ‘নিজের বলার মতো একটি গল্প’ ফাউন্ডেশন থেকে টানা ৯০ দিনের সেশন চর্চা ক্লাস সম্পন্ন করেছেন। বিসিক ট্রেনিং এবং হার পাওয়ার এর ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ সহ আরো বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। একজন মাস্টার্স পাশ মেয়ে চাকরি নিবোনা, চাকরি দেবো এই মানসিকতা বুকে ধারন করে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে বাসায় বসে কেক তৈরি করছেন। তবে অতি শীঘ্রই কেক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে ৩ জন নারী সহযোগী ছাড়াও আরো ২০ থেকে ৩০ জন নারীকে কর্মসংস্থান দিয়ে তাদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে সরকারী স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাই শুধু নিজেকে স্বাবলম্বী নয় আরো নারীদেরকে সাবলম্বী করে গড়ে তুলে তাদেরকে নিয়ে এগিয়ে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ৪০জন নারীকে এ পর্যন্ত কেক তৈরীর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। নিজের কাজ সম্পর্কে নারী উদ্যোক্তা হেলেন আক্তার কামনা বলেন, আমি যেহেতু বেকিং কেকের কাজটা ভালো জানি তাহলে তো আমি আমার পণ্য দিয়ে কিছুটা হলেও মানুষের প্রয়োজন মেটাতে পারবো। ফ্রেশ, নির্ভেজাল, কোয়ালিটি সম্পন্ন কেক যদি কাস্টমারের দরজায় পৌঁছে দেই, কিছুটা হলেও মানুষের প্রয়োজন মিটবে। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই কিছু করুক না করুক একটা কেক কেটে তাদের জন্মদিন সেলিব্রেট করে , বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চারা এটাতে বেশি খুশি হয়, আর বাচ্চাদের এই খুশিটুকু দেখতে আমার খুব ভাল লাগে। এই জন্যই কেক নিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার এই পণ্যেটা একটা সেলিব্রেটি আইটেম, কাস্টমাররা এই পণ্যেটা নিয়ে সেলিব্রেট করে আনন্দ পায়, তাই এই পণ্য নিয়ে কাজ করি এবং আমিও আনন্দ পাই। আমি আমার সৃজনশীল মেধা দিয়ে কেকের ওপর বিভিন্ন ডিজাইন করে থাকি। তাই এই কাজে আমি তৃপ্ত। কাস্টমারদের এইভাবেই সেবা দিয়ে যাবো।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.