কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় জাকির হোসেন (২০) নামে এক যুবককে পানির সঙ্গে অ্যাসিড মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গত রোববার রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারগাড়া গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির হোসেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারগাড়া গ্রামের পূর্বপাড়ার আলমগীর হোসেনের ছেলে। তিনি বাসা-অফিসের পানির লাইন মেরামত ও স্থাপনের কাজ করতেন। তার স্ত্রীর নাম সোনিয়া খাতুন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন জাকির ও সোনিয়া। বিয়ের পর থেকে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকতো। পারিবারিক কলহের জের ধরে কয়েকদিন আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য ঝগড়া হয়। পরে স্ত্রী সোনিয়া রাগে-অভিমানে তার বাবার বাড়ি চলে যান। বাবার বাড়ি ও স্বামীর বাড়ি একই এলাকায়। রোববার রাতে শ্বশুর শুকুর আলীর বাড়িতে যান জাকির। পরে তার স্ত্রী বাড়িতে ফিরতে রাজি না হলে তিনি বাড়ি ফিরে যান। বাড়ি যাওয়ার পর জাকির গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সোমবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত জাকিরের বাবা আলমগীর বলেন, রোববার রাতে শ্বশুরবাড়ি গেলে স্ত্রী সোনিয়া পানির সঙ্গে অ্যাসিড মিশিয়ে খাওয়ায়। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হয়। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সোনিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এজাজুল হাকিম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী সোনিয়া তার স্বামীকে পানির সঙ্গে অ্যাসিড মিশিয়ে পান করিয়ে হত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। নিহতের পরিবার মামলা করবে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও আশরাফুল আলম বলেন, এ নিয়ে আমি গণমাধ্যমকর্মীদের কিছু বলতে পারবো না। সেটা নিয়মের মধ্যে পড়ে না। দরকার হলে আদালতে বলবো।
হাসপাতালের দুই নম্বর ওয়ার্ডের একজন সিনিয়র নার্স বলেন, অ্যাসিড পান করায় জাকিরকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল আলম বলেন, নিহতের স্বজনেরা হত্যার অভিযোগ করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মুজিবনগরে হয়রানির আরেক নাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেনারি হাসপাতাল
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ