তীব্র অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৩০ জনের মতো রোগীর চিকিৎসা চলছে। এছাড়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে ভর্তি আছেন ১৬ জন।
অক্সিজেনের অভাবে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা প্রায় প্রত্যেকেরই অবস্থা সংকটপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অক্সিজেনের জন্য রোগীর স্বজনদের ছোটাছুটি, হাহাকার আর কান্নায় এখানকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজন জানান, তার বাবা বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার হঠাৎ করে অক্সিজেনের প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু এখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেই। বাবাকে বাঁচাতে তিনি বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেনের জন্য যোগাযোগ করলেও পাননি। পরে তাকে কুষ্টিয়ায় করোনা হাসপাতালে নেয়া হয়। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, হঠাৎ করে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজন হলে এক রোগীর কাছ অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে নিয়ে আরেক রোগীকে দিয়ে সাময়িকভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, ৪৮ টি সিলিন্ডার দিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও অন্তত ১শ’ সিলিন্ডারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরঞ্জাম প্রয়োজন। অবস্থা খুবই খারাপ। রোগী যেভাবে বাড়ছে, আমরা হিমশিম খাচ্ছি। এভাবে সম্ভব না। পরিস্থিতি ভয়াবহ। চোখের সামনেই অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা গেলে কিছু করার থাকবেনা বলে উল্লেখ করে এই স্বাস্থ্য কমকর্তা বলেন, এখানে মেডিসিন কনসালটেন্ট নেই। চিকিৎসকেরা পজেটিভ হচ্ছে, তারা সবাই আক্রান্ত হয়ে গেলে হাসপাতাল লকডাউন দিতে হবে। উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িছে। করোনা আক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৪ জনের। বর্তমানে আক্রান্তদের অধিকাংশই নিজ নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার কুষ্টিয়া জেলায় ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৫ জনের। এছাড়া নতুন করে আরো ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে অক্সিজেনের অভাবে রোগীদের হাহাকারের খবর শুনে নিজ অর্থায়নে তাৎক্ষণিক ২০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়েছেন সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ। বর্তমানে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ