স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় কাঁচা তরিতরকারির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কাঁচাঝাল থেকে শুরু করে কাঁচকলার দাম স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। রসুন পেয়াজের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এক কেজি করল্লা কিনতেও গুনতে হচ্ছে ১শ’ ২০ টাকা। যে পেঁপের দাম পাঁচ দশ টাকার বেশি হয়নি ইতোপূর্বে তা এখন ৩০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কেনো? চাষি, ব্যাপারী এবং খুচরা বিক্রেতাদের অভিমত অনেকটাই অভিন্ন। ভোক্তাদের ভিন্নতম।
চুয়াডাঙ্গার বড়বাজারসহ কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে জানা গেছে, এক কেজি আলুর দাম ৩৮ টাকা। আড়ৎ থেকে কমপক্ষে পাঁচকেজি নিলে এ দাম পয়ত্রিশে পাওয়া যেতে পারে। রসুন ১শ ২০ টাকা, আদা ২শ টাকা, পিয়াজ ৪০ টাকা, কাঁচাঝাল ১শ ৮০ থেকে দুইশত টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বেগুন? দু পাঁচ টাকা করে বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ৬০ কেজিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এক কেজি কাচকলা কিনতে হলেও গুনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা। পটল ৬০ টাকা, কচু ৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়ো ৩০ টাকা জিঙে ৪০ টাকা কেজি হলে স্বল্প আয়ের মানুষ তরকারি বলতে কী কিনবে? দিনমজুরী যখন ২শ ২০ টাকা থেকে সাড়ে ৩শর মধ্যে তখন এক কেজি স্বর্ণা চাল কিনতে লাগছে ৪২ টাকা। আউস ৪৫, দেশি বাশমতি ৫৫ আর মিনিকেট ৫২ টাকা কেজি দাম হাকা হচ্ছে। ছোলার ডাল ৮০ টাকা, মুগডাল দেড়শ টাকা, কলাইয়ের ডাল ১শ ১০ টাকা, মসুর ডাল ১শ ১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। লবনের দাম বেশ কিছুদিন ধরেই স্থতিশীল। কেজিতে লাগছে ৪০ টাকা। সয়াবিন তেল ১শ থেকে ১শ ১০ টাকা, সরিষার তেল ১শ ১০ টাকা। খাটি কি না স্বয়ং দোকানদারও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে ঝাঁঝ আছে। মাছ মাংসের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই স্বল্প আয়ের মানুষদের যাওয়া প্রায় বন্ধ। জামাই এলেও অনেকে ওদিকে তাকাতে পারেন না। যাদের বাড়ির বা যে শাশুড়ি বাড়ি মুরগি পোশেন তাদের কথা আলাদা। বাড়ি পোশা মুরগি থাকলেই কেবল জামাইয়ের পাতে তুলে দিতে পারেন দেশি মুরগির সালন। গরুর দাম কিছুটা কমলেও গোস্ত সেই সাড়ে ৪শ টাকাতেই রয়েছে। খাসির গোস্ত ৭শ। এক খাচি ডিমের কিছুদিন দাম বেড়ে ২শ ৭০ টাকায় হয়েছে। ব্রয়লার ১২০, লেয়ার আড়াইশ প্যারেন্ট বা খামারে ডিম পেড়ে বুড়ো হওয়া বড় মুরগি ২শ ৩০ ও সোনালী মুরগির দাম ২শ ৩০ টাকা। আর দেশি মুরগি? সাড়ে ৪০ টাকাতেও সবসময় পাওয়া কঠিন। ক্ষেত্র বিশেষ রঙ করা সোনালীই কিনতে হয় দেশি বলে। মাঝেরবাজারে রুই ২শ ৮০ আর কাতলা ৩শ টাকা কেজি। ইলিশের ভরা মরসুমেও দাম রয়েছে সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের বাইরে। এই যখন বাজারের অবস্থা তখন স্বল্প আয়ের মানুষগুলো এই করোনা সঙ্কটে দিন কাটছে কতটা কষ্টে তা বোদ্ধাদের বুঝতে নিশ্চয় কষ্ট হয় না। ভোক্তাদের অনেকেরই অভিমত- চাল ডাল শাক সবজি মরিচ লবনের দাম কিছুটা কম থাকলে পাতে কিছুটা তরকারি জোটে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। অথচ কাজ নেই। করোনার কারণে বহু পেশার মানুষকে হাতগুটিয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।
চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের প্রায় অধিকাংশ এলাকাতেই আনাজের বাজার চড়া। কেনো? চাষিদের অনেকেই বলেছেন, অতিবৃষ্টির কারণে সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ঝালের ফুল ঝরে ফল কমছে। ফলে চাহিদমতো সরবরাহ পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এ কারণেই দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অবশ্য পিয়াজ রসুনের দাম বৃদ্ধির তেমন যুক্তি দেখাতে পারেননি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তেমন কেউ। তাদের অভিমত রসুন পেয়াজ আদা সবই চালানি। চড়াদামে কিনে আনতে হচ্ছে বলেই তার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।