করোনা : চুয়াডাঙ্গায় ৫ মেহেরপুরে ৪ ও ঝিনাইদহে ৩৪ জন শনাক্ত
স্টাফ রিপোর্টার: গত ২৪ ঘন্টায় চুয়াডাঙ্গায় একই পরিবারের তিনজনসহ আরও ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্ত ৫ জনই আলমডাঙ্গা উপজেলার। শনিবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে আসা ১০ জনের নমুনার প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিআরডিবি অফিসের আরও চারজন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলার ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় ওই চারজন কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে জানায় সিভিল সার্জন অফিস। ঝিনাইদহ জেলায় আরও ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এ জেলায় মোট ৬২১ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘন্টায় একই পরিবারের তিনজনসহ আরও ৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৬৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৫ জনসহ এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২২৭ জন। জেলায় এ পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের নমুনার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। আক্রান্ত ৫ জনের সকলেই আলমডাঙ্গা উপজেলার। তাদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। আক্রান্ত ৫ জনের মধ্যে রয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের একই পরিবারের ৩ জন, পাইকপাড়ার একজন এবং কলেজপাড়ার একজন। নতুন আক্রান্তদের হোম আইসোলেশন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সদর উপজেলায়। যেখানে ১৪৫ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ৭৭ জনই সুস্থ হয়েছেন। প্রাণ গেছে ২ জনের। আলমডাঙ্গায় আক্রান্ত ৯১ জনের মধ্যে সুস্থ ৫৭ জন, দামুড়হুদায় ৯৩ জন আক্রান্তে ইতোমধ্যেই ৬৬ জন বেঁচে ফিরেছেন ও মারা গেছে ৩ জন। জীবননগর উপজেলায় করোনার শিকার ৪০ জন, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৭ জন। গত ১৯ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন আলমডাঙ্গা উপজেলার ইতালি ফেরত এক যুবক। সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান বলেন, করোনা মোকাবিলায় ঘর থেকে বের না হওয়ায় সব থেকে উত্তম। এরপরও জরুরি প্রয়োজনে বের হলে মুখে মাস্ক পরে বের হতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিআরডিবি অফিসের আরও চারজন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। গতকাল শনিবার জেলার ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় ওই চার জন কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে জানায় সিভিল সার্জন অফিস। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২৯। আর সুস্থ ৭৬ জন। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে, গেল ১৪ জুলাই গাংনী বিআরডিবি’র পল্লী জীবিকায়ন কর্মসূচির এক কর্মী করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হন। তিনি গাংনী উপজেলা পরিষদের ডরমেটরিতে বসবাস করেন। ডরমেটরি লকডাউন করে তার সংস্পর্শে অফিসের কয়েকজনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক, মাঠ সংগঠক এবং অফিস সহকারী কোভিড-১৯ পজিটিভ হন। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবাসস্থল গাংনী উপজেলা পরিষদের ডরমেটরি কোয়ার্টার লকডাউন করা হয়েছে। করোনভাইরাস আক্রান্ত সকলের শারীরিক অবস্থা ভালো। তাদেরকে রুম আইসোলেশনে চিকিৎসকদের তত্ত্বাধানে রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ শনিবার ৪ জন আক্রান্ত শনাক্তের মধ্য দিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২৯। এর মধ্যে সদর ৬৯, গাংনী ৪৭ ও মুজিবনগর উপজেলায় ১৩। সুস্থ ৭৬ জনের মধ্যে সদরে ৪৭, গাংনী ২৩ এবং মুজিবনগরে ৬জন।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ জেলায় আরও ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এ জেলায় মোট ৬২১ জন করোনা আক্রান্ত হলো। করোনায় এ পর্যন্ত ১২ জন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা হচ্ছে। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক মুখপাত্র ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস জানান, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ২২ জন, কোটচাঁদপুর উপজেলায় চারজন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ছয়জন, শৈলকুপা উপজেলায় একজন ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় একজন রয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জেলায় করোনা ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এবং কালীগঞ্জ শহরের তিনটি ওয়ার্ডে লকডাউন করা হয়েছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে।