চুয়াডাঙ্গার কোর্ট মোড় এলাকায় করোনা আক্রান্ত এক যুবককে অ্যাম্বুলেন্সযোগে নেয়া হলো হাসপাতালে
স্টাফ রিপোর্টার: অষ্টাদশী শাফফাত উদ্দিন বাবা ও মায়ের সাথে থাকেন পৌর এলাকার মুক্তিপাড়ায়। শাফফাত উদ্দিন, তার বাবা শামীম উদ্দিন ও মা আইরিন খাতুন করোনা পজেটিভ হন গত ৯ আগস্ট। করোনা পজেটিভ হওয়ার পর পরিবারের তিনজনই বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে শাফফাত উদ্দিন মাস্ক পরিধান না করেই কোর্ট মোড়ে আসেন মায়ের ওষুধ ও মিস্টি কিনতে। ওষুধ কিনতে যান বজলু মেডিকেল ও মিস্টি কেনেন কাশফুল মিস্টির দোকান থেকে। কা-জ্ঞানহীন ওই যুবকের এমন কর্মকা-ে স্থানীয়রা শুধু হতবাকই হননি, হয়েছেন রীতিমত আতঙ্কিতও। স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করে এমন অবাধ চলাফেরা করতে নিষেধ করায় তার সাথে বাগবিত-া হয় অনেকের সাথেই। পরে বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রথমে ওই যুবককে একটি মাস্ক দিয়ে পরিধান করতে বলে পুলিশ। পরে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে পুলিশ। পুলিশের নজরদারিতে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ওই যুবককে পাঠানো হয় সদর হাসপাতালে। রাখা হয় করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডের হলুদ জোনে।
করোনা আক্রান্ত যুবক শাফফাত উদ্দিন বলেন, তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। বাবা শামীম উদ্দিন সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করেন। মা আইরিন খাতুন গৃহিনী। গত ২৭ আগস্ট নতুন করে নমুনা পরীক্ষায় বাবা শামীম উদ্দিনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু শাফফাত ও তার মা আইরিন খাতুন নতুন করে নমুনা পরীক্ষা করান নি।
কা-জ্ঞানহীন কর্মকা-ে ক্ষমা চেয়ে শাফফাত উদ্দিন আরও বলেন, সকাল থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় মায়ের প্রেসারটা বেড়ে যায়। তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে ওষুধ নিতে আসেন কোর্ট মোড়ের বজলু মেডিকেলে। কাশফুল মিস্টির দোকান থেকে কিছু মিস্টিও নেন। পরে মাস্ক পরিধান না করায় স্থানীয় লোকজনের সাথে বাগবিত-ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, মুক্তিপাড়ার পুরাতন জেলখানার পেছনে স্বপরিবারে বসবাস করেন শাফফাত উদ্দিন। ওই যুবকের বাড়ির সবাই করোনা পজেটিভ। দুপুরে মাস্ক না পরে তার অবাধ চলাফেরায় কোর্ট মোড়ের সবাই আতঙ্কিত হয়। এভাবে চলাফেরা করতে নিষেধ করায় খারাপ আচরণ করে সে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান জানান, করোনা পজেটিভ এক যুবক কোর্ট মোড় এলাকায় অবাধে চলাফেরা করায় ওই এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে উপস্থিত হয় সদর থানা পুলিশ। ওই যুবকের মুখে মাস্ক না থাকায় তাকে একটি মাস্ক দিয়ে তা পরিধানের জন্য বলে পুলিশ। বিষয়টি অবহিত করা হয় সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। পরে কোর্ট মোড়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশের নজরদারিতে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ওই যুবককে পাঠানো হয় সদর হাসপাতালে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীর বলেন, ওই যুবককে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডের হলুদ জোনে রাখা হয়। পরে তার বাবা এসে অনুরোধ করায় তাকে আবার বাড়িতে পাঠানো হয়। গত ৯ আগস্ট তারা স্বপরিবারে করোনা পজেটিভ হন। ২৭ আগস্ট নতুন করে নমুনা পরীক্ষায় ওই যুবকের বাবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ওই যুবক ও তার মায়ের নতুন করে নমুনা দেয়ার কথা রয়েছে।