ঐতিহ্যবহনকারী বাঙালীর নিজস্ব উপকরণ নিয়ে শোভযাত্রায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান

১৪৩০ বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় প্রস্তুতিসভা সম্পন্ন : বর্ষবরণের আমেজ ছড়ানোর কর্মসূচি গ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার: বাঙালী ঐতিহ্যবহণকারী রকমারি উপকরণ নিয়ে আসন্ন পহেলা বৈশাখ বরণে মঙ্গল শোভাযাত্রায় সকলকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। ১৪৩০ বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, মাহে রমহজানের পবিত্রতার প্রতি লক্ষ্য রেখে এবারও বাঙালীর নিজস্ব বর্ষবরণ উৎসবে মেতে ওঠা বাঙালীর নিজস্ব চেতনতারই অংশ। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিসভায় গতবারের সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপনসহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপস্থাপন করা হয়। কার্যবিবরণী পাঠসহ নির্দেশনা উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামীদ রেজা। চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম মালিক, সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নানসহ জেলার সরকারি প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিসভায় এবারও উঠে আসে চৈত্রকান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গ্রাম পর্যায়ে অনুষ্ঠিত লোকমেলা প্রসঙ্গ। এসব মেলা বাঙালীর নিজস্ব সাংস্কৃতিরই অংশ হওয়ায় তা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সে লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক হতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের তরফেও নজর রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। এবারও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অদূরবর্তী ঝিনুক বিদ্যালয়ের নিকটস্থ ভিজে স্কুল খেলার মাঠ থেকে সকাল ৯টায় বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ শোভাযাত্রায় ব্যক্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, সংস্থার তরফে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী নানা উপকরণে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করে পুরস্কৃত করা হবে। শোভাযাত্রা শেষ হবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে। কলেজ প্রাঙ্গন মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনাসভা ও পুরস্কার বিতরণ। পহেলা বৈশাখের আগের দিনেই জেলা শিশু একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আয়োজন করা হবে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা। এসব প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের কলেজ মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে। শিশু সদন, কারাগার, হাসপাতালে সরবরাহ করা হবে বাঙালীর উন্নতমানের খাবার। এসব আয়োজন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্যদ্বয়কে উপদেষ্টা করে একটি মূলকমিটিসহ বেশ ক’টি উপ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইন-শৃংখলারক্ষাকারী সংস্থাসমূহকে যথযথভাবে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, পহেলা বৈশাখের আগের রাতেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানগুলোতে আলপনা আঁকা হবে। এ লক্ষেও গঠিত হয়েছে একটি উপ-কমিটি।

সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের কর্মসূচিগ্রহণ শেষে সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাক খান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা সম্পন্নের ঘোষণা দেয়ার আগে পুনরায় পহেলা বৈশাখের কর্মসূচিতে সকলকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাঙালীর ঐতিহ্যবহণ করে এমন সকল প্রকারের উপকরণ নিয়ে শোভযাত্রা বর্ণিল করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীরাও এ শোভাযাত্রায় অংশ নেবে। তবে বর্ষবরণের দিনও বেপরোয়া মোটরসাইকেল চলাচল রোধে বাড়তি নজরদারি করা হবে। যেহেতু পহেলা বৈশাখে শহর বন্দর গ্রাম গঞ্জে ব্যবসায়ীদের হালখাতার রেওয়াজ রয়েছে। এ রেওয়াজও বাঙালীর নিজস্ব ঐতিহ্যের অংশ। এ আয়োজনও যাতে উৎসবমুখর এবং শান্তিপূর্ণ হয় সেদিকেও আমাদের নজর রাখাতে হবে।  প্রসঙ্গত: আগামী ১৪ এপ্রিল শুক্রবার সারাদেশে ১৪৩০ বাংলা নববর্ষ বরণ করা হবে। এবারও যেহেতু পবিত্র রমজানের মধ্যে এ বর্ষবরণ, সেহেতু আয়োজনও বহুক্ষেত্রেই সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More