একদিনে চারজনের বিষপান : গলায় ফাঁস দেয়া একজনের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা
আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গায় আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়ঙ্করহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে দিনে জনসচেনতা, জীবনযাত্রার মান ও শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও কমছে না এর প্রাদুর্ভাব। অধিকাংশই গলায় ফাঁস, বিষপান ও হারপিক পান করে নিজের জীবন বিনাশ করছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে চারজন ভর্তি হয়েছে। এছাড়াও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা এক। এই পাঁচজনই হলেন নারী। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৪০ এর মধ্যে। আত্মহত্যা চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তারা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামের গৃহবধূ রুপালি খাতুন, আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ গ্রামের মেঘনা খাতুন, দামুড়হুদা উপজেলার লাবনী খাতুন, একই উপজেলার চিৎলা গ্রামের শেফালী খাতুন। এর মধ্যে লাবনী খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করেন।
এই পাঁচ পরিবারের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। পাঁচজনের মধ্যে সাংসারিক কলহের জেরে চারজন এবং পিতা-মাতার উপর অভিমান করে এক নারী আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিতে চেয়েছিলেন। এদিকে আত্মহত্যাকারী কবিতা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ গ্রামের মাঝের পাড়ার তোফায়েল হোসেনের স্ত্রী। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিবারের অগোচরে গলায় ফাঁস দেয়। পরে ঝুলন্ত অবস্থায় কবিতাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযোগ না থাকায় অবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে দর্শনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর।
পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হয়ে আসছিলো। এ নিয়ে পারিবারিক কলহে পরিণত হয়। গতকাল এরই জেরে কবিতা খাতুন সকলের অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে সচেতনরা বলছেন, মানুষ অতিমাত্রায় হতাশাগ্রস্ত ও সংবেদনশীল হয়ে আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সব বয়সী মানুষের মধ্যেই বেড়েছে এর প্রবণতা। এছাড়া নৈতিক স্খলন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার, পারিবারিক কলহ, ব্লাকমেইলে অনেককে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।