অসুস্থ শাশুড়িকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পথে পুত্রবধূ নিহত
চুয়াডাঙ্গার ছোটসলুয়ায় মোটরসাইকেলের চেনে ওড়না পেঁচিয়ে বিপত্তি
বেগমপুর প্রতিনিধি: হাসপাতালে ভর্তি থাকা অসুস্থ শাশুড়িকে দেখতে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলের চেনে গলার ওড়না পেঁচিয়ে ফারহানা নামের এক গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে সোমবার সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছোটসলুয়া গ্রামের মাঝের পাড়ার তেমাথা মোড় নামকস্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফারহানা খাতুন (৩০) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের ছিলন্দিপাড়ার জোগালে রাজমিস্ত্রী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পিতার বাড়ি জীবননগরের কাশিপুর গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
পারিকবারিক সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের ছিলন্দিপাড়ার জোগালে রাজমিস্ত্রী আনোয়ার হোসেনের মা আছিয়া খাতুন গত ৩দিন আগে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। আনোয়ার হোসেন কাজে ব্যস্ত থাকায় মাকে দেখার জন্য সোমবার সকালে স্ত্রী ফারহানাকে ছোটভাই আশিকের সাথে হাসপাতালে পাঠান। আশিক ভাবীকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটসলুয়া গ্রামের মাঝেরপাড়ার তেমাথামোড় নামক স্থানে পৌঁছুলে ফারহানার গলায় থাকা ওড়না মোটরসাইকেলের চেনে জড়িয়ে যায়। এতে পাকা সড়কের ওপর মুখ থুবড়ে ছিটকে পড়ে যান তিনি। গুরুতর আহত ফারহানাকে দ্রুত উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারহানাকে (৩০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মাথায় অর্থাৎ গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত ফারহানা জীবননগর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মাঝেরপাড়ার কামরুল ইসলামের মেয়ে। গত ৭ বছর আগে ছিলন্দিপাড়ার আনোয়ার হোসেনের সাথে তার পারিবাকিরভাবে বিয়ে হয়। ফারহানার মর্মান্তিক এ মৃত্যুতে উভয় পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। দাম্পত্য জীবনে ফারহানার রয়েছে ফাহিম (৬) ও মাহিম (৩) নামে দুটি ছেলে সন্তান। লাশের দাফন কোথায় হবে এনিয়ে স্বামীর পরিবার ও পিতার পরিবারের মধ্যে দেখা দেয় টানাপোড়েন। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয় লাশ দাফন হবে পিত্রালয়ের কাশিপুর গ্রামে। গতকালই রাত পৌনে ১০টার দিকে নিহতের লাশ নিজগ্রামে পৌঁছায়। নামাজে জানাজা শেষে রাত পৌনে ১১টার দিকে দাফনকার্য সম্পন্ন করে পরিবারের লোকজন।