অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন অন্তঃসত্তা নারী : নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ

চুয়াডাঙ্গায় হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্ত নির্ণয়ে ভুল তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে রক্ত পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ভুল গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে দেয়া হলে কিডনি নষ্ট হওয়াসহ রোগীর মৃত্যুর ঝুকি থাকে। সত্যতা পেলে দ্রুত অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধানের। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ই জানুয়ারি অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রক্তের গ্রুপসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। সেখানে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় রক্তের গ্রুপ ‘বি’-পজিটিভ। এরপর এই অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীরে রক্ত দেয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে আবারো হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করা হলে রক্তের গ্রুপ আসে ‘এবি’ পজিটিভ বলে জানানো হয়। এরপর রোগী ও তার স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগী চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার পলাশপাড়ার ওয়াসিকুর রহমান সাকিল অভিযোগ করে দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি তার স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ ও অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। সেখানে রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ আসে। পরবর্তীতে রক্তের গ্রুপ এবং অন্যান্য পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে তিনি ডা. তাসনিম সারোয়ারকে দেখান। চিকিৎসক রিপোর্টটি দেখে বলেন, আপনার স্ত্রীর রক্তশূন্যতা আছে আর যেহেতু তিনি অন্তঃসত্তা এজন্য তাকে দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হবে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী রক্ত দেয়ার জন্য ডোনার সাথে করে সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে যায়। সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করে। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে যে রিপোর্ট দেয়া হয় তাতে রক্তের গ্রুপ আসে ‘এবি’ পজিটিভ। সাকিল অভিযোগ করে বলেন, এই রিপোর্ট দেখে মুহূর্তের মধ্যে ভুক্তভোগীর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে রক্তের গ্রুপ আশে ‘বি’ পজিটিভ আর সদর হাসপাতালে বলছে রক্তের গ্রুপ ‘এবি’ পজিটিভ। হঠাৎ করে আবার ‘বি’ পজেটিভ, কিভাবে ‘এবি’ পজেটিভ হয়ে গেলো। আমি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে পুনরায় পরীক্ষা করলে তখনও রিপোর্টে আসে ‘এবি’ পজেটিভ। যদি আমার স্ত্রীর শরীরে রক্ত দেয়া হতো তাহলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। আমি এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এদিকে ভুল ব্লাড গ্রুপিং এর ঘটনা জানাজানি হলে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। সচেতন মহলের দাবি হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অদক্ষ্য ল্যাব টেকনিশিয়ান ও মালিককে দ্রুত আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শহিদুল ইসলাম দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, টাইপিং মিসটেক হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুল গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে প্রবেশ করলে কিডনিসহ রোগীর মৃত্যুর ঝুকি থাকে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More