বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়ায় ঝড়ে উড়ে গেছে দুর্যোগ সহনীয় ঘরের টিনের চাল। ভেঙে গেছে সামনের সব পিলার। ফাটল ধরেছে পাশের ঘরে। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করায় এমনটি ঘটেছে বলে এলাকাবাসী মনে করছে। অপর দিকে ঝড়ে উড়ে যাওয়া টিনের চাল বিহীন ঘরেই মধ্যেই বসবাস করছেন ভুক্তোভোগীরা। প্রশ্ন উঠেছে এসব ঘর নির্মাণের মূলদায়িত্বে কারা ছিলেন?
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বরোডের নিকট উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় ২টি ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে একটি সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দেয়া হয়। যার প্রতিটি গৃহনির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ঘর ২টি বরাদ্দ পান আব্দুল করিমের স্ত্রী মুসলিমা খাতুন ও তছের মিস্ত্রির মেয়ে কহিনুর বেগম। মুসলিমা ও কহিনুর বলেন, গত পৌষমাসে আমরা ঘরগুলো বরাদ্দ পায়। এক বছরের বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করছি। গত বৃহস্পতিবারের ঝড়ে মুসলিমার ঘরের ওপরের টিনের চাল উড়ে গিয়ে পড়েছে অন্যের ঘড়ির ঘরে। সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গেছে সামনের তিনটি পিলার। আর কহিনুরের ঘরের পিলারে ধরেছে ফাটল। যে কোন সময় আবারও ঝড় হলে সেটাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ওই রাতের ঝড়ে প্রাণ বেঁচে গেছে ঘরের মধ্যে থাকা আব্দুল করিমের পরিবার।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ঘর নির্মাণের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, কাঠ ব্যবহার হতে দেখেছি। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিলো যেভাবে কাজ হয়েছে তাতে মনে হয়, এই ঘর বেশি দিন টিকবে না। আমাদের আশঙ্কায় ঠিক হলো। দুর্যোগ সহনীয় ঘরের কথা বলা হলেও সেই দুর্যোগ ঝড়ে উড়েগছে টিনের চাল, ভেঙে গেছে পিলার। একটি সূত্র জানিয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার জন্য এ ঘরগুলো তৈরিতে কোনো ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসনকে কাজ স¤পন্ন করার দায়িত্ব দেয়া হয়। তদারকিতে থাকবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। খাসজমিতে তৈরি করা ঘরগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা হয়। এ বাড়িগুলো দৃষ্টিনন্দন করতে রঙিন টিনের দুই কামরার সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়। বেগমপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ভেঙে পড়া ঘরের তথ্য সংগ্রহ করে উপজেলাতে পাঠানো হয়েছে। ঘরের ওপরে চাল না থাকায় খোলা আকাশের নিচেই ঘরের মধ্যে বসবাস করছেন পরিবারের লোকজন। বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, এসব ঘর নির্মাণে জনপ্রতিনিধিদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া বলেন, আমার আসার আগে এ ঘরগুলো নির্মাণ হয়েছে। তখন বাজেট কমছিলো। জানতে পেরেছি কালবোশেখি ঝড়ে আকন্দবাড়িয়ায় একটি ঘরের চাল উড়েগেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।