স্টাফ রিপোর্টার: বাংলা দিনপঞ্জি অনুযায়ী মঙ্গলবার ছিল ১৫ ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের এইদিনে উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছিল জেলার নারী শিক্ষার প্রধান বিদ্যাপীঠ চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ। বসন্ত উৎসবকে বর্ণিল করতে উজ্জ্বল বর্ণের সাজসজ্জায় সেজেছিলেন কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রীরা। কলেজ প্রাঙ্গণকেও সাজানো হয়েছিল মনের মতো করে।
নাচ, গানের সুর, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত চলে বসন্ত উৎসব। কলেজের নারী শিক্ষক ও ছাত্রীদের পরণে ছিল বাসন্তী ও লালসহ উজ্জ্বল রঙের শাড়ি ও সালোয়ার কামিজ। সাথে ছিল গোলাপ, গাঁদা, মল্লিকাসহ নানা রঙের ও বর্ণের ফুলের অলংকারে হাতের কবজি, বাহু ও খোপার সাজসজ্জা। অনেকে মাথায় পরেছিলেন নানাজাতের ফুলের তৈরি রিং ও মুকুট। শিক্ষকেরা পরেছিলেন মানানসই রঙের পাঞ্জাবি ও ফতুয়া ।
সকাল নয়টায় উৎসবের মঞ্চে সমবেত কণ্ঠে ‘আহাআজি এ বসন্তে, এতো ফুল ফোটে, এতো বাঁশি বাজে, এতো পাখি গায়’ এবং‘ বসন্ত এসে গেছে’ গানের মধ্যদিয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়। এরপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গান, বসন্ত কথন, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় ও একক নৃত্য পরিবেশনা চলতে থাকে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ মো.মনিরুজ্জামান ও শিক্ষক মাসুদ পারভেজ গান পরিবেশন এবং বাংলা বিভাগের প্রধান ড. আব্দুর রশিদ ও শিক্ষক শামীমুজ্জামান কবিতা আবৃত্তি করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আসমাউল হুসনা মুনমুন, নাজনীন ইভা, নিশাত নাজনীন, পাখি খাতুন, ঋতু খাতুন, জান্নাত, জয়ন্তী, অন্তি, রিংকি, প্রিয়া, তামান্না, সুমাইয়া, রত্না খাতুন ও পারুল আক্তার সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেয়।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.আজিজুর রহমান সকলকে বসন্ত উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ষড়ঋতুর আমাদের এই দেশে বসন্তকালকে বলা হয় ঋতুর রাজা। ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যান্য ঋতুকেও আমরা উদযাপন করি। তবে, বসন্ত উৎসব সব আয়োজনকে ছাড়িয়ে যায়, ছাপিয়ে যায়।
আমন্ত্রিত অতিথি দর্শনা সরকারি কলেজের নবাগত প্রফেসর অধ্যক্ষ মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এসে আমাদের সন্তানেরা মুঠোফোনের মধ্যে এতোটাই মগ্ন থাকে যে, অনেকেই আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কেই জানেনা, জানতেও চায় না। নতুন প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য তুলে ধরতে এ ধরণের আয়োজন খুবই প্রয়োজন। শিগগিরই আমার কলেজেও এ ধরণের আয়োজন করব।’
অতিথি হিসেবে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ। প্রিয় প্রজন্মকে ভিনদেশি সাংস্কৃতির কবল থেকে রক্ষা করতে আবারও বারো মাসে ১৩ পার্বণে ফিরে আসার সময় এসেছে। সে হিসেবে মহিলা কলেজের এই আয়োজন মনে থাকবে অনেক দিন।’