স্টাফ রিপোর্টার: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলুতুনন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল রোডের বনলতা ভবনে এ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী বলেন, শুধু বাংলাদেশ ভূখন্ডে নয়, দুনিয়াজুড়ে বিবেকবান মানুষের কাছে ভয়ংকর বিষাদের এক দিন ১৫ আগস্ট। জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল, সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে। তিনি বলেন, ঘাতক চক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রের যেকোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী আরও বলেন, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন। দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এই মহান নেতা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতারই ডাক। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।
ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিলো তার স্বপ্ন। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞান-গরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
আলোচনা সভায় জেলা কৃষকলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালেকের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, সদর থানা কৃষকলীগের আহ্বাযক আব্দুল মতিন দুদু। এ সময় আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে, বাদ আসর বনলতা ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের সকল শহীদের স্মরণে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মিলাদ মাহফিলটি পরিচালনা করেন বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল মজিদ।