স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন এক মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট। বৃহস্পতিবার রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত এএসএম মিরাজুল হাসান তুষার (৩২) ওই পাড়ার আবেদ হাসানের ছেলে এবং স্থানীয় ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট। পারিবারিক কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে তুষারের ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে মা চারুলতা ম-ল ডাকাডাকি করেন। এতে কোনো সাড়া না পেয়ে বিকল্প দরজা দিয়ে তুষারের ঘরে ঢোকেন তিনি। এসময় দেখতে পান গলার মাফলার সিলিংফ্যানে ফাঁস দিয়ে ঝুলছে তুষারের মরদেহ। প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করে সিলিংফ্যান থেকে গলার মাফলার কেটে তুষারের মরদেহ নামানো হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, তুষার ৪ বছর আগে সাথী খাতুন নামে একজনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে কোনো সন্তান নেই। তুষার চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে চাকরি করেন। পিতা আবেদ হাসান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। তুষারের মা তরুলতা ম-ল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার। তাদের সংসার ভালোই চলছিলো। কিন্তু কিভাবে কী হয়ে গেল কেউই কিছু বলতে পারছেন না। তবে পারিবারিক কলহের কারণেই তুষার আত্মহত্যার পথ পেছে নিয়েছেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। প্রতিবেশীরা জানান, তুষারের মা তরুলতা ম-লের সাথে স্ত্রী সাথী খাতুনের ভালো সম্পর্ক ছিলো না। এসব নিয়েই হয়তো তুষার আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। এদিকে তুষারের আত্মহত্যার খবর দেয়া হলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ নিহত তুষারের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। ওই চিরকুটে লেখা আছে ‘আমি এএসএম মিরাজুল ইসলাম (তুষার) স্বজ্ঞানে-স্বেচ্ছায় নিজের সম্পূর্ণ ইচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। এই আত্মহত্যার পেছনে কারো কোনো একবিন্দু পরিমাণ কোনো দোষ নেই। সরি মা। রাত ১২টা ৪০ মিনিট।’ পুলিশের ধারণা বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ওই চিরকুট লেখার পরই তুষার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। চুয়াডাঙ্গা ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডা. সফিউল কবির জিপু বলেন, ‘তুষার খুব ভালো ছেলে ছিলেন। কাজেকামে ছিলেন আন্তরিক ও যতœবান। তার আত্মহত্যার ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত।’
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সর থানার ওসি আবু জিহাদ খান মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ‘পারিবারিক কলহের কারণে তুষার আত্মহত্যা করেছেন। এ বিষয়ে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিববারের পক্ষে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ তুষারের পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার বাদমাগরিব পার্শ্ববর্তী সবুজপাড়া জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে চুয়াডাঙ্গা জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে তুষারের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।