এক ভণ্ড কবিরাজ নিজে নারী সেজে এক যুবককে বিয়ে করেছেন। টাঙ্গাইলের সখীপুরের এ ঘটনায় এলাকায় তুলকালাম সৃষ্টি হয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাকে গণধোলাই দিয়ে এলাকাছাড়া করে। বুধবার উপজেলার দাড়িয়াপুর ফালু চাঁনের মাজারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন মাস আগে ঘাটাইল উপজেলার জামুরিয়া গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে আলতাফ আলী (৩৫) নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিয়ে দাড়িয়াপুর মাজারপাড় এলাকায় আসেন। ওই কবিরাজ মাঝেমধ্যে শাড়ি পরেও এলাকায় ঘোরাফেরা করতেন। তিনি সন্তানহীন মহিলাদের সন্তান দানের ঝাড়ফুঁক দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন বাড়িতে গত তিন মাস ধরে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে ওই এলাকার কৃষক রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। জুবায়ের ও তার পরিবারকে কবিরাজ আলতাফ আলী টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বলেন- ‘আমি রাত ১২টার পর মেয়ে মানুষে রূপান্তরিত হব, আমাকে বিয়ে করলে প্রচুর সম্পত্তির মালিক হবেন।’ গত ১৩ এপ্রিল রাতে জুবায়ের ও কবিরাজ আলতাফের সম্মতিতেই তাদের বিয়ের প্রস্তুতি চলে। এতে লোভে পড়ে জুবায়েরের পরিবারেরও সম্মতি ছিল বলে জানা গেছে। বুধবার সকালে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওই কবিরাজকে ধরে এনে পরনের শাড়ি-ব্লাউজ খুলে গণধোলাই দেয়। পরে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান শাইফুল ইসলাম শামীম, সানোয়ার হোসেন মাস্টার ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই কবিরাজকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়রা দাবি করেন, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের কাজী মাসুদ রানা এক লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে পড়িয়েছেন। কাজী মাসুদ রানা বলেন, ‘একটি বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে হবে বলে আমাকে ওই এলাকায় যেতে বলা হয়েছিল। ওই বাড়িতে গিয়ে মেয়ের (পাত্রীর) জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বলি। পরিচয়পত্র দিতে না পারায় আমি সঙ্গে সঙ্গে ফিরে এসেছি। রেজিস্ট্রি বা বিয়ে পড়ানোর তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে।’
সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর স্থানীয়রা ওই কবিরাজকে হিজরা দাবি করেন। পরে স্থানীয়দের অনুরোধেই তাকে ওই এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কবিরাজ আলতাফের পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ভাতিজা ইয়ামিন ফোন ধরেন। তিনি জানান, আমার চাচা আলতাফ আলী আমাদের এলাকায়ও (ঘাটাইল) কবিরাজি করত।তাই বলে এক ছেলেকে বিয়ে করবে? এটা মেনে নিতে পারছি না।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ