কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: মোমেনা খাতুন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধার ভিক্ষা করেই চলে দিন। থাকেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর শহরের নতুন বাজারের রেল মার্কেটের কাছে একটি ঝুপড়ি ঘরে। ঝুপড়ি ঘরের এই সংসারে তার কিছু হাঁস-মুরগী ছাড়া আর কেউ নেই। সন্তানরা থাকলেও কেউ তার কাছে থাকে না। সম্প্রতি প্রচ- জ্বর আর ঠা-া কাশিতে অসুস্থ হয়ে নিজের ঝুপড়ি ঘরেই পড়ে ছিলেন মোমেনা খাতুন। কয়েকদিন তাকে দেখতে না পেয়ে শফিকুল ইসলাম নামের এক চা বিক্রেতা তার খোঁজ নিতে যান। এরপর বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে। সোমবার দুপুরে সাংবাদিকরা তাকে দেখতে যান। এ সময় তার অবস্থা খারাপ দেখে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
চা বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, শহরের রেল মার্কেটে আমার চায়ের দোকানের পেছনে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন মোমেনা। সারাদিন ভিক্ষা শেষে বিকেলে ঘরে ফিরে রান্না করে খেয়ে শুয়ে পড়েন। বেশ কিছুদিন হলো তাকে না দেখে রোববার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি তার শরীরে প্রচ- জ্বর। উঠতে পারছেন না, কয়েক দিন হয়তো না খেয়ে পড়ে ছিলেন। সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের পরিচালক শিবু পদ বিশ্বাস জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে দুপুরে খাবার ও কাপড় নিয়ে ওই বৃদ্ধার ঘরে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই তিনি বিছানা থেকে উঠে বের হতে পারছেন না।
কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জামির হোসেন জানান, সহকর্মী সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে দুপুরে গিয়ে দেখি মোমেনা খাতুন প্রচ- জ্বর নিয়ে পড়ে আছেন। তার নাজুক অবস্থা দেখে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মামুনুর রশিদ জানান, দুপুরে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মহুয়া পারভিন জানান, তার শারীরিক অবস্থা খুবই দুর্বল। দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময় তার পেটে খাবার পড়েনি। চিকিৎসা চলছে, আশাকরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ