চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় সদর হাসপাতালের আউটডোরে সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে চুয়াডাঙ্গা সদর নির্বার্হী কর্মকর্তা এম সাইফুল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. এহসানুল হক, মেডিকেল অফিসার ডা. সাজিদ হাসান, পৌর টিকাদন সুপার ভাইজার আলী হোসেন ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সহকারী স্টোর কিপার রেহানা খাতুন। সকাল ৮টায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ৬ মাস থেকে ১১ মাস পর্যন্ত শিশুদের নীল ও লাল রঙের ভিটামিনন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবার মোট এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৪৫জন শিশুদের এই ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় ৬ মাস থেকে ১১ মাস ও এক থেকে ৫ বছরের সকল শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার ৪টি উপজেলায় ও ৪টি পৌরসভায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ১৭ হাজার ৩৬৩জন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ও এক লাখ ৩০ হাজার ৫৬৭জন এক থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ৮৯৬টি আউটরীচ ও ১০টি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এক হাজার ৮১২জন স্বেচ্ছাসেবক, ২৭১জন সরকারি ও বেসরকারি কর্মী এবং ১১৮জন প্রথম সারির তত্বাবধায়ক এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন। জাতীয় পুষ্টি সেবা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি সেবা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে এবং দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র’র সভাপতিত্বে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপা, এমটিইপিআই ফারুক আহমেদ, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নাঈম উদ্দিন, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক হাবিবুর রহমান হবি, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কামরুজ্জামান বেল্টু, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নিয়ামত আলী, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আতিকুর রহমান, ইউপি সদস্য লিয়াকত আলী, শামসুল ইসলাম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য হাসিনা খাতুন, রুপালি খাতুন ও সাহানাজ খাতুন প্রমুখ। এবার এ উপজেলায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় ৩০ হাজার ৯৭৭জন শিশুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৬-১১মাস বয়সী ৩ হাজার ৭০৫জন শিশুকে একটি নীল রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সীর ২৭ হাজার ২৭২জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলা পর্যায়ে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। গতকাল শনিবার সকালে মেহেরপুর-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ কয়েকজন শিশুর মুখে ক্যাপসুল তুলে দিয়ে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। মেহেরপুরে দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনে ৬-৯ মাস বয়সের এক লক্ষ ৪০ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু হয়। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম, সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আবু সাঈদ, মেহেরপুর-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার বজলুর রহমান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনজুমান আরা, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইনজামামুল হক, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. কামরুন নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য মায়েদের প্রতি আহ্বান জানান। মেহেরপুর জেলার ২টি পৌরসভা ও ৩টি উপজেলার ৪৭৫টি কেন্দ্রে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৬৭৪জন, ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৬১ হাজার ১৯৪জন, ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৬৭৪জন নীল ভিটামিন, ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৬১ হাজার ৫২০ জনকে লাল ভিটামিন খাওয়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.