স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও দর্শনায় দৈনিক ইত্তেফাক এর ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। র্যালি, আলোচনাসভা ও কেককাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। আমন্ত্রিত অতিথি এবং চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় প্রেসক্লাব চত্বরে ফিরে আসে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের হলরুমে শোভাযাত্রা উত্তর এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী দৈনিক পত্রিকা ইত্তেফাক। এ পত্রিকাটি তার নিজস্ব উজ্জ্বলতায় দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আজও গৌরবময় উজ্জ্বলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে নিজস্ব স্বকীয়তায়। আরোহন করেছে শেকড় থেকে শিখরে। পুলিশ সুপার তার পেশাগত দ্বায়িত্বের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, পুলিশ এবং সাংবাদিকের কাজ অনেকটা একই রকম। সাংবাদিকরা অনেক তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সমাজের দর্পণ হিসাবে যে সংবাদগুলো পরিবেশন করে থাকে তা অনুকরণ করে পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সমাজের নানান অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের প্রতিকার করে সমাজকে সাধারণ মানুষের আবাসযোগ্য করে গড়ে তোলে। তিনি আরও বলেন, এই পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া আমার জেলার (ঝালোকাঠি) কৃতি সন্তান। তাই এই পত্রিকা এবং পত্রিকা সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে নিয়ে আমি অহংকার করি। জনাব তোফাজ্জল হোসেন নিজে যেমন আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছিলো এ পত্রিকার মাধ্যমে, তেমনি এই পত্রিকাটিও এ দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনকে বেগবান করেছে তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে। বিশেষ করে ১৯৫৪’র নির্বাচন, ১৯৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামে বাঙালি ও বাংলার মুখপাত্র হয়ে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে জনমত গঠন করেছে। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে বেগবান করার পাশাপাশি চূড়ান্ত স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো এই পতিথযশা পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গার বিশিষ্ট শিক্ষা অনুরাগী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাড. সেলিম উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চ্যানেল আই ও জনকণ্ঠ প্রতিনিধি রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার ইবু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফজলে রাব্বি সাগর ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ।
দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি তরুণ সাংবাদিক রুবাইত-বিন-আজাদ সুস্থিরের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শাহ আলম সনি, এন টিভি প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, দৈনিক ইত্তেফাকের দামুড়হুদা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান ধীরু প্রমুখ। আলোচনা অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইসলাম রকিব। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ৭ পাউন্ড জন্মদিনের কেক কেটে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রথমে দৈনিক ইত্তেফাকের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি রুবাইত-বিন-আজাদের মুখে কেক তুলে দেন। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রধান অতিথি উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের মুখে কেক তুলে দেন। দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনায় দৈনিক ইত্তেফাকের ৭০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। পরে বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা প্রদর্শন করা হয়েছে প্রেসক্লাবের সামনে। শেষে দর্শনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাসভা। এ সভার সভাপতিত্ব করেন দৈনিক ইত্তেফাকের দামুড়হুদা উপজেলা সংবাদদাতা মনিরুজ্জামান ধীরু। প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন দর্শনা নাগরিক কমিটির সচিব গোলাম ফারক আরিফ। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন গণউন্নয়ন গ্রন্থগারের পরিচালক কবি আবু সুফিয়ান, দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আওয়াল হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি হানিফ মন্ডল, সাংবাদিক এফএ আলমগীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মামুন, মনিরুজ্জামান সুমন, ওয়াসিম রয়েল। প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল হক পিপুলের উপস্থাপনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, দর্শনা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি শাহ জামাল, আলতাফ মাস্টার, আসহাবুল আলম প্রমুখ।