স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা তিতুদহের চকপাড়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাবালিকা এক স্কুলছাত্রীর দেহভোগের অভিযোগে মামলা দায়ের হয় পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে। সে মামলা বেশিদূর গড়াতে না গড়াতেই প্রভাবশালী ছেলের বাবা স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতাকে ম্যানেজ করে ওই মামলা আপোষ রফা করে ফেলেছে বলে জানাগেছে। সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এ আপোষ রফা হয়েছে বলেও জোরগুঞ্জণ শোনা যাচ্ছে। তবে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মেয়ের বাবা ওই টাকা এখন অবদি হাতে পায়নি।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের আড়িয়া গ্রামের চকপাড়ার হতদরিদ্র পরিবারের নাবালিকা এক স্কুলছাত্রীকে বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে দেহভোগ করে একইপাড়ার প্রভাবশালী মুকুল হোসেনের ছেলে শাহিন আরেফিন ওরফে তন্ময়। এঘটনায় মেয়ের বাবা বাদী হতে গত ৭ এপ্রিল দর্শনা থানায় অভিযুক্ত তন্ময়ের নামে ধর্ষণ এবং হুমকি ধামকি দেবার অভিযোগে ছেলের বাবা মুকুলের নামে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা বেশিদূর গড়াতে দেয়নি প্রভাবশালী মুকুল হোসেন। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাকে ম্যানেজ করে সে মামলা সাড়ে ৩ লাখ টাকায় আপোষ রফা করে নিয়েছেন। এ টাকার মধ্যে মেয়ের বাবা পাবে আড়াই লাখ। আর ১ লাখ টাকা অন্যান্যরা। বর্তমানে আদালত খোলা না থাকায় চূড়ান্ত আপস মিমাংসার কাজ ছেলেপক্ষ হাতে না পাওয়ায় মেয়ের বাবার ধার্যকৃত আড়াই লাখ টাকা গ্রামের জনৈক এক মাতব্বরের নিকট জমা আছে। আপসের কথা জানতে পেরে গ্রামের অনেকেই মন্তব্য করে বলেন, ক্ষমতা আর টাকা থাকলে অপরাধ করেও মুক্তি পাওয়া যায়। যেমনটি ঘটেছে মুকুল ও তার ছেলে তন্ময়ের বেলায়। এ ব্যাপারে মেয়ের বাবা টাকা হাতে না পাওয়া এবং আপস মিমাংসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে তিনি বলেন, গ্রাম পেতে বসবাস তাই সমাজকে অপেক্ষা করি কি ভাবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস আগে তন্ময় প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে দেহভোগ করে এক নাবালিকা স্কুলছাত্রীর। যা পর পরবর্তীতে তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় মোবাইলে কথোপোকথন চলতো। অসাধনতা বসত ওই কথোপোকথনের রেকডিং মোবাইলে ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে অনেকেরই হাতে সে রেকডিংয়ের কপি চলে যায়। বিষয়টি মেয়ের বাবা সামাজিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করলেও ছেলের বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় বেকে বসে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়াই। অবস্থা বেগতিক বুঝে মোটা অংকের অর্থদ- দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে নেয় ছেলের বাবা মুকুল হোসেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দর্শনা থানার (তদন্ত) ওসি শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, আপস মিমাংসার বিষয়টি জানা নেই, এমন কোনো কাগজও হাতে পায়নি। জনৈক আইনজীবি বলেন, এ মামলা সামাজিকভাবে মিমাংসা হলেও আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে চুড়ান্ত নিস্পত্তি ছাড়া মুক্তি মিলবে না।