স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদান করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন। তিনি গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় ওই পদে যোগদান করেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০’র ধারা ৩১(১) অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন, ডিন, কৃষি অনুষদ, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা-কে ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস-চ্যান্সেলর পদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ প্রদান করে। তিনি ১৯৫৩ সালে মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি কৃষি (অনার্স) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি কৃষি (হর্টিকালচার) ডিগ্রি লাভ করেন। অধ্যাপক ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন ১৯৯০ সালে জাপানের বিখ্যাত কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তিনি মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরেট করেন এবং ১৯৯৩-৯৪ সালে জাপান ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল সায়েন্সে ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ছিলেন। অধ্যাপক ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন তার শিক্ষাজীবনে কমনওয়েলথ একাডেমিক ফেলো পুরস্কৃত হন এবং ২০০৯ সালে গ্রিনউইচ ইউনিভার্সিটি, লন্ডন ইউকে-তে ব্রাসিকা সোমাটিক হাইব্রিডাইজেশনের ওপর গবেষণা সম্পন্ন করেন। অধ্যাপক ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন ১৯৭১ সালে স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ওই সময় শ্রীনগরস্থ ষোলঘর ক্যাম্পের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রফেসর ড. এম মোফাজ্জেল হোসেন বিগত ৪০ বছর যাবৎ কৃষি গবেষণা এবং বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে কৃষি শিক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে সাফল্য হিসেবে তার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ৪৪ জন পি-এইচ ডি ও ৬৭ জন এমএস ছাত্র-ছাত্রী তাদের ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। গবেষণার সাফল্য হিসেবে তিনি এ পর্যন্ত ১২টি সবজি ও ফলের জাত উদ্ভাবন করেন, তার মধ্যে তার উদ্ভাবিত আপেল কুল বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের পুষ্টি ও ভিটামিনের ঘাটতি মেটাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে তিনি ২০১৬ সালে সেরা কৃষি ব্যক্তিত্ব হিসেবে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ কর্তৃক ‘কেআইবি কৃষি পদক ২০১৬’ লাভ করেন। এছাড়া, তিনি ২০০৩ সালে ইউজিসি পদক এবং ১৯৯৩ সালে ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতি পদক’ অর্জন করেন। কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে তার রচিত পঁচিটি টেক্স বই ও ২৫৭টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অধিকন্ত, পেশাগত ও সামাজিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে তিনি প্রায় ১০টি পেশাগত সমিতির আজীবন সদস্য। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ফান্ড, শ্রীনগর কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি; স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয় শাখা; গোল্ডেন স্ট্রট কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং এপ্লাইড প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়কে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন।