গাংনীর সেই আলোচিত সুদ কারবারী আনারুল আবারও জেলহাজতে

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী আলোচিত সেই সুদ কারবারী আনারুল ইসলামকে (৩৫) আবারও জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালত তার জামিন বাতিল করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, গেলো ১১ মার্চ সন্ধ্যায় গাংনী থানার এক যুগান্তকারী অভিযানে উত্তরপাড়ার আলোচিত ছয়তলা ভবন মালিক সুদ কারবারী আবু হানিফ ও আনারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে গাংনী থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ব্যাংকের সই করা সাদা চেক ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। চড়া সুদে টাকা দেয়ার বিনিময়ে গ্যারান্টি হিসেবে এসব চেক ও স্ট্যাম্প রেখেছিলো তারা। এ মামলায় বেশ কিছুদিন হাজতবাসের পর আনারুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও আগের ব্যবসা শুরু করে। এরই মাঝে আনারুল ইসলামসহ উত্তরপাড়ার কুখ্যাত সুদ কারবারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা। এতোদিন সুদ কারবারীদের দাপটে মুখ বুজে চড়া সুদ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। ভুক্তভোগী ভোমরদহ গ্রামের দুই নারী ২৩ মার্চ গাংনী থানায় আনারুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তখন তিনি জেলহাজতে ছিলেন। পরবর্তীতে ২৯ মার্চ জামিনে মুক্তি পান আনারুল।

এদিকেজ ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগের খবর পেয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য চেষ্টা করে এবং তাদের গচ্ছিত চেক ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আনারুল। তবে চতুর আনারুল মিমাংসার আড়ালে নানাভাবে ওই দুই নারীকে অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই দুই নারী গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং স্বেচ্ছায় আদালতে গিয়ে জবানবন্দী দেন। বিজ্ঞ আদালত ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দী রেকর্ড করেন। আনারুলের কাছে গচ্ছিত তাদের সই করা ব্লাঙ্ক চেক দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানান ওই দুই নারী।

এদিকে আনারুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়ে শুধু ভুক্তভোগী নারীদের হুমকি দেয়ার পাশাপাশি যে মামলায় তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন সেই মামলার স্বাক্ষীদেরকেও নানাভাবে হুমকি ও হয়রানি করা শুরু করেন। এ বিষয়টি নজরে আসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার এসআই আশিকুর রহমানের। তিনি বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে আনারুলের জামিন বাতিলের জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞ জামিন বাতিলের আবেদন শুনানি শেষে তার জামিন বাতিল পূর্বক পুনরায় জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশে পুলিশ তাকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।

এদিকে আনারুলের জামিন বাতিল হওয়ায় ভুক্তভোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অপরদিকে আত্মগোপনকৃত সুদ কারবারী উত্তরপাড়ার নজরুল ইসলাম, দুখী ও পশ্চিম মামলাদহ গ্রামের শফি উদ্দীন দেদারসে সুদ কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। সুদের টাকায় যারা বিত্তবৈভব গড়ে তুলেছেন; তাদের বিরুদ্ধেও ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। ১১ মার্চ দুই সুদ কারবারী গ্রেফতারের পর চিহ্নিত এসব সুদ কারবারীরা আত্মগোপন করেছিলো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More