গাংনী প্রতিনিধি: অবশেষে বাজার মনিটরিংয়ে নেমেছে গাংনী পৌর পরিষদ। গতকাল রোববার বিকেলে গাংনী বাজারের তরমুজ, কলা, ডাব, সবজি ও মাংসের দর নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। পৌর পরিষদের তোপের মুখে বিক্রেতারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। তরমুজসহ নিত্যপণ্যের সকল পণ্য নায্যমূলে বিক্রি করতে বাধ্য করেন পৌর মেয়র। মেয়রের এ ধরণের উদ্যোগে স্বস্তি নেমে এসেছে ক্রেতা-ভোক্তাদের মনে। সাধুবাদ জানিয়ে এ কার্যক্রম অব্যহত রাখার জন্য মেয়রের প্রতি অনুরোধ করেছেন গাংনীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
জানা গেছে, গাংনী বাজারের সবজি-ফলসহ নিত্যপণ্যের বাজারে অগ্নিমূল্য বিরাজ করছে। দোকানিদের মর্জিমাফিক দর নির্ধারণে নাভিশ^াস ওঠে ক্রেতা সাধারণের। বিষয়টি নজরে এলে মেয়র আহম্মেদ আলী পৌর পরিষদ সদস্যদের নিয়ে গাংনী বাজারে হানা দেন। এ সময় আকাশচুম্বি দরের বিষয়টি নিশ্চিত হন তিনি।
প্রথমে তরমুজ ক্রেতাদের সাথে কথা বলেন মেয়র। তরমুজের ক্রয় মূল্য থেকে বিক্রয় মূল্যে বিস্তার ফারাক থাকায় তার প্রতিবাদ করেন মেয়র। স্বাভাবিক দরে বিক্রি না করতে পারলে তরমুজ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি। এসময় তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে দেন বিক্রেতারা। প্রয়োজনে পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে তরমুজ বিক্রি করে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা হবে বলে জানান মেয়র। মেয়রের এমন ঘোষণায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তরমুজ বিক্রেতারা। ক্রয়মূল্য থেকে নায্য লভ্যাংসহ প্রতি কেজি তরমুজ ৪৫ টাকা নির্ধারণ করেন মেয়র। গাংনীর ব্যবসায়ীদের কাছে যে পরিমাণ তরমুজ আছে তার ক্ষেত্রে এই দর প্রযোজ্য। পরবর্তীতে যে তরমুজ আমদানি করা হবে তার ক্রয়মূল্য বিবেচনায় পুনঃদর নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান মেয়র আহম্মেদ আলী।
এদিকে তরমুজের পর পৌর পরিষদের সদস্যরা ডাব ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে সাক্ষাত করেন। সেখানেও পাওয়া যায় ক্রয়-বিক্রয় মূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক। ক্রয় মূল্য বিবেচনায় প্রতি পিস ডাব সর্বোচ্চ ৫০ টাকা নির্ধারণ করেন মেয়র।
এদিকে মনিটরিংয়ের সময় পৌর পরিষদ সদস্যরা মাংস দর পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতি কেজি মাংস ৫৫০ টাকা বিক্রির বিষয়ে প্রতিবাদ জানান মেয়র আহম্মেদ আলী। পাশর্^বর্তী হাট-বাজারগুলোতে এর চেয়ে অনেক কম দামেই মাংস বিক্রি হচ্ছে। তাহলে গাংনী বাজারের মাংসের দর এতো বেশি কেন? মেয়রের এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন কসাইরা। আশেপাশের বাজারগুলোর সাথে দর সমন্বয় করে মাংসের দর পুনঃনির্ধারণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন মেয়র।
এদিকে মেয়রের এ ধরনের উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা বেশ চাপের মধ্যে পড়েন। দর কমিয়ে ক্রেতা সাধারণের সাধ্যের মধ্যে যাতে দর থাকে সেজন্য মেয়রের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।
বাজার মনিটরিংকালে মেয়র আহম্মেদ আলী ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিক্রেতাদের দরে কিনতে হবে এমন না। ক্রেতাদের পক্ষ থেকে একটা প্রতিবাদ থাকা দরকার। তবে বাজারে যদি কেউ অস্থিতিশীল অবস্থায় সৃষ্টি করে তাহলে পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করা হবে।