। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ থেকে শুরু হলো রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। আহ্লান, সাহ্লান হে মাহে রমজান। আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস এটা। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ জাল্লাশানুুহ্ এরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ করা হয়েছিল যাতে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি অর্জন করতে পার (বাকারা: ১৮৩)। রোজা শব্দটি মূলত ফারসী ও উর্দু ভাষা থেকে আমাদের অভিধানে প্রবেশ করেছে। এ কারণে আমরা এটাকে রোজার মাস হিসেবেই চিনি। বাংলাতে রোজা বলা হলেও মূলত এর আরবি নাম হলো শাহরু রমাদন বা রমজান মাস। আর রোজার আরবি প্রতিশব্দ হলো সওম বা সিয়াম। অশেষ কল্যাণের ফল্গুধারায় সিক্ত সিয়াম সাধনের এই মাসে আল্লাহর রহমত বৃষ্টি ধারার ন্যায় ঝরতে থাকে এবং প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। এ মাসে একটি নফল আদায় করলে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করার সমান ছওয়াব পাওয়া যায়; আর প্রতিটি ফরজের ছওয়াব অন্য মাসের সত্তরটি ফরজের ছওয়াবের সমান দেওয়া হয়। এই মাসে দুর্বৃত্ত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় যাতে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক কর্মগুলো নষ্ট করতে না পারে। এই মাসের ফজিলতের অন্যতম কারণ হলো এই মাসেই মহাপবিত্র গ্রন্থ কুরআন নাজিল হয়েছিল। রমজান মাসে তারাবিতে সম্পূর্ণ কুরআন খতম করা একটি সুন্নত আমল। এই কারণে গতকাল থেকেই হাফেজগণ মসজিতে মসজিদে তারাবির নামাজে কুরআন খতম করা শুরু করেছেন। গতকাল প্রথম দিনে দেড় পারা পড়া হয়। ইসলামি ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবার প্রত্যেক মসজিদে প্রথম ছয় দিনে দেড় পারা করে মোট নয় পারা এবং বাকি দিনগুলোতে এক পারা করে পড়া হবে। দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিষের একটি উপযুক্ত সময় আছে; ব্যবসায়ীদের লাভের একটি মওসুম আছে, প্রতিটি ফসলের একটি নির্দিষ্ট ঋতু আছে। এমনিভাবে সর্বাধিক নেকী কামায়েরও একটি সময় আছে। আর এটা হলো এই রোজার মাস। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে এই মাসটি ভালো ভালো আমালের মধ্যে কাটানোর তৌফিক দান করুন। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে)
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.