খোশ আমদেদ মাহে রমজান
।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
পবিত্র মাহে রমজানের মাগফেরাত দশকের আজ পঞ্চম দিন। রমজানের রোজা প্রত্যেক বালেগ পুরুষ ও নারীর ওপর ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য। তবে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এবং বিশেষ কিছু ব্যক্তির জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে। উদাহরণস্বরূপ, মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি আছে। পরবর্তীতে ওই রোজাটির কাযা আদায় করবে। কষ্ট না হলে রোজা রাখা উত্তম, তবে অস্বাভাবিক কষ্ট হলে রোজা রাখা মাকরূহ। যেদিন সফর শুরু করেছে, সেদিন সেহরির সময় যদি মুকিম থাকে তার জন্য ওইদিন রোজা ভাঙা জায়েয নেই। রোজা ভাঙলে শুধু কাযা আদায় করা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। সফর অবস্থায় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে, তা ভাঙা জায়েয নেই, কেউ ভেঙে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফ্ফারা দিতে হবে না। মুসাফির সফরের কারণে রোজা রাখেনি, কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই মুকিম হয়ে গেছে, সেদিনের অবশিষ্ট সময় রমজানের সম্মানার্থে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকবে। যদি এমন রোগ হয়, রোজার কারণে যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে অথবা সুস্থতা ফিরে পেতে বিলম্ব হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে।
উল্লেখ্য, এ আশঙ্কা বাস্তব সম্মত হওয়া, যদি একেবারেই স্পষ্ট হয় তাহলে তো কোন কথা নেই, নতুবা একজন অভিজ্ঞ দ্বীনদার মুসলমান ডাক্তারের মতামতের প্রয়োজন হবে। যদি রোগ থেকে সুস্থ হয়ে যায়, কিন্তু শারীরিক দূবর্লতা রয়েছে এবং রোজা রাখলে, অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে তার রোজা না রাখা জায়েয আছে। পরবর্তীতে কাযা আদায় করবে। গর্ভবতী নারী রোজা রাখলে, নিজের জীবন বা সন্তানের জীবনে কোন ক্ষতির আশঙ্কা হয়, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখা জায়েয আছে। পরবর্তীতে রোজাটির কাযা আদায় করবে। দুগ্ধ দানকারিণী মা যদি রোজা রাখার কারণে সন্তান দুধ না পায় এবং সন্তান দুধ ছাড়া অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হয় এবং দুধ না পাওয়ার কারণে সন্তানের স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কা হয়; তাহলে মায়ের জন্য রোজা না রাখা জায়েয আছে। দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি যে রোজা রাখতে সক্ষম নয়, সে রোজা ভাঙবে এবং রোজার পরিবর্তে ফিদয়া আদায় করবে। রোজা রাখা অবস্থায় যদি খুবই তৃষ্ণা বা ক্ষুধা লাগে এবং পানাহার না করলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা হয়, তাহলে রোজা ভাঙার অনুমতি আছে। পরবর্তীতে ওই রোজাটির শুধু কাযা আদায় করবে। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)