কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট করায় লিটন আলী নামের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য প্রার্থীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে জয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বাবা নবীর উদ্দিন গুরুতর আহত হন। দুজনকেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা গুরুতর। রোববার সকালে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, লিটন উপজেলার জুনিয়াদহ ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুর মালিথাপাড়ার বাসিন্দা। তিনি নিজেও এবারের ইউপি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহেদ আহমেদ শওকতের নৌকা প্রতীকের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, গত ১১ অক্টোবর জুনিয়াদহ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হাসানুজ্জামান হাসানের লোকজন লিটনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। লিটনের চাচাতো ভাই বিশু বলেন, ‘মোঃ ফারদেসের নেতৃত্বে রনি, বেল্টু, লিটন, নিজাম, জিয়াসহ অনেকেই এসে লিটনকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের বাড়ি মির্জাপুর হাটের উত্তর পাড়ায়। মো. ফারদেস জয়ী চেয়ারম্যান হাসানের পক্ষের কর্মী। বিশু আরও বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লিটনের মাছের খামার দামুসী বিল থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মারতে মারতে নিয়ে যায়। পরে মির্জাপুর বাজারে একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। এ সময় ১০-১৫ জন বেদম মারধর করে। তার বাবা উদ্ধার করতে গেলে তাকেও খুব মারধর করে ফেলে রাখে তারা।’ বিশু বলেন, ‘প্রায় ৪ ঘণ্টা বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয় লিটনকে। এরপর নতুন চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান হাসান ঘটনাস্থলে এসে বলেন ‘অনেক মারধর হয়েছে। এখন ছেড়ে দে’। এই কথা বলে তিনি আমাদের হাতে তুলে দেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহেদ আহমেদ শওকত বলেন, ‘সে ছিলো আমার কর্মী। নৌকার পক্ষে নির্বাচন করার কারণে আজ লিটনকে গাছের সাথে বেঁধে আমার বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হাসানুজ্জামান হাসান ও তার লোকজন মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। এ অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও দোষীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। শওকত আরও বলেন, ‘শুধু লিটন নয় শনিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হরিপুরে কেরামত কবিরাজের ছেলে সুজনের বাড়িতেও আগুন দিয়েছে তারা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান হাসানের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। লিটনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে হাসানের পক্ষের মো. ফারদেসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছিলাম না। কি হয়েছে আমি জানি না। ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের সূত্রে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ পাচ্ছি। ঘটনা যাই হোক, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ