স্টাফ রিপোর্টার: শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সোমবার ভোরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বিকেলে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। ২৭ এপ্রিল এ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তিনি কেবিনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস- প্রশ্বাস নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর কিনা, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন কিনা-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে যখন যে রোগী থাকেন তারা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। আমি উনার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে কথা বলে এসেছি। ম্যাডাম স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছেন। রাত ৮টায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ডা. জাহিদ জানান, ভোরে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। এর পরপরই বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। পরে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সংক্ষিপ্ত সিদ্ধান্তে ম্যাডামকে সিসিইউতে নেয়া হয়। রোগমুক্তির জন্য তিনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। কী কারণে খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মানুষের যে কোনো সময়, যে কোনো পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি যে চিকিৎসকরা আছেন তাদের সিদ্ধান্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানাতে পারবো। খালেদা জিয়ার আবারও করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান ডা. জাহিদ হোসেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তির পর সেখানে এক থেকে দুদিন রাখার কথা বলেছিলেন তার চিকিৎসকেরা। তখন তারা (চিকিৎসক) জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার করোনোর কোনো উপসর্গ নেই। তাই তাকে হাসপাতালের নন- কোভিড জোনে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। একদিন পর চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। রোববার মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসে সব পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে নতুন করে কিছু শারীরিক পরীক্ষাও দেন। ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হলে ফলাফল আবারও পজিটিভ আসে। ‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তারা করোনামুক্ত হয়েছেন। ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় দ-িত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। পরে আরও দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।