একান্ত আলাপচারিতায় জীবননগর পৌর মেয়র আ.লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম
দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেবো : তবে দল ছেড়ে যাবো না
জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর পৌরসভার বর্তমান মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আসন্ন নির্বাচনে এবারও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী তৎকালীন মেয়র হাজি নোয়াব আলীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশা করেছিলেন; কিন্তু দলীয় মনোনয়ন তার ভাগ্যে জোটেনি। তিনি বলেছেন, একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। পৌরবাসী আমার সাথে রয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমি আশা করছি পৌরবাসী আবারও আমাকে বিজয়ী করবেন। এ নিয়ে গতকাল সোমবার পৌর কার্যালয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় নির্বাচন নিয়ে তিনি তার পরিষ্কার মতামত তুলে ধরেছেন।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি ও আমার পরিবারসহ আমার গোষ্ঠীর সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে নানা সময়ে ক্ষমতাশীন দলের রোষানলে পড়েছি, মামলা খেয়েছি। দলকে সংগঠিত করতে গিয়ে হয়রানি হয়েছি অনেক। বিগত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের দুর্গ হিসেবে খ্যাত চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে দলীয় প্রার্থী হাজি আলী আজগার টগরকে আমরা নির্বাচিত করতে সক্ষম হয়। তিনি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনকে উন্নয়নের একটি অন্যতম চূড়াতে নিয়ে গেছেন। ২০১০ সালে পৌর নির্বাচনে আমি দলীয় সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়। নির্বাচনে মাত্র ২৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও অনেক নেতা-কর্মীকে পাশে পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করি এবং মেয়র হিসেবে বিজয়ী হয়।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান মেয়র হিসেবে এবার আমার শতভাগ আশা ছিলো দলীয় মনোনয়ন আমিই পাবো; কিন্তু মনোনয়ন না দিয়ে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত ৫ বছর মাঠে থেকে আমি তৃণমূলে দলতে সংগঠিত করেছি। পৌরবাসীকে সাধ্যমতো সেবা ও পৌরসভার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। আমার প্রতি পৌরবাসী ও ভোটারদের যথেষ্ট আস্থা ও সমর্থন রয়েছে বলে আমি মনে করি। একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছি।
গত ৫ বছরে মেয়র হিসেবে আপনি সফল হয়েছেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ বছরে একটি পৌরসভাকে উন্নয়নের মোড়কে পুরোপুরি মুড়িয়ে দেয়া সম্ভব না। কিন্তু আমি উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট নতুন করে করা হয়েছে। বর্তমানে পৌর এলাকার মধ্যে কোনো ভাঙাচোরা রাস্তা নেই। পয়ঃনিষ্কাষণের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা পুরোপুরি করতে পেরেছি এমন কথা আমি বলবো না। তবে করার চেষ্টা করছি। বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে যদি আপনাকে বহিষ্কার করা হয়; তাহলে আপনি কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াতে দল আমার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নেবে আমি তা মাথা পেতে নেবো। তবে একজন আওয়ামী লীগার হিসেবে আমি দল ছেড়ে যাচ্ছি না। দলের সাথে আছি এবং দলের সাথেই আগামীতেও থাকবো। তিনি আবারও বলেন, একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি এবং পৌরবাসী আমাকে আবার সুযোগ দিলে আগামী ৫ বছরে জীবননগর পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে পৌরবাসীর সকল চাহিদা পূরণ করবো ইনশাআল্লাহ।