।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ২৬ রমজান। আজকের রাত পবিত্র কদরের রাত। মাগরিবের পর পরই শুরু হবে সেই মহান রজনি শবে কদর যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। এই রাত সীমাহীন বরকতময়। শবে কদরের রাত্রে হযরত জীব্রাঈল (আ.) ফেরেশতাদের একটি জামাতের সাথে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং এমন প্রত্যেক বান্দার জন্য রহমতের দোয়া করেন যে দাঁড়িয়ে অথবা বসে আল্লাহর জিকির করে বা ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে (মেশকাত, বায়হাকী শো’আবুল ঈমান)। এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, নিশ্চয় আমি কদরের রাত্রিতে এই কোরআন নাজিল করেছি। আপনি জানেন কি কদরের রাত্রি কি? কদরের রাত্রি হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। এই রাতে নাজিল হয় ফেরেশতাগণ এবং জীব্রাঈল (আ.) তাদের পরওয়ারদিগারের আদেশে সর্ববিধ শান্তি ও কল্যাণ সহকারে। উহা বিরাজ করে ফজর পর্যন্ত (সূরা কদর)। এই আয়াত থেকে বুঝা গেলো কুরআনের কারণেই এই রাতের মর্যাদা। এটাও পরিষ্কার যে পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন এই রাতেই নাজিল হয়। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রি ইবাদতে কাটাবে তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে (বুখারী, মুসলিম)। যে ব্যক্তি কদরের রাত হতে বঞ্চিত থেকে গেল সে যেন সমস্ত কল্যাণ হতেই বঞ্চিত হলো (তারগীব: ইবনে মাজাহ)। অধিকাংশ হাদিসের রেওয়ায়েত অনুসারে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে উহা শেষ দশকেই রয়েছে। এক হাদিসে হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা শবে কদর তালাশ করিবে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিতে (বুখারী)। কিন্তু শেষ দশকের বিজোড় রাত গুলোর মধ্যে ২৭ রমজানের রাতের কথা হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ থাকার কারণে এই রাতকেই (২৬ শে রমজান দিবাগত রাত) কদরের রাত হিসাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমান পালন করে থাকেন। বিশিষ্ট সাহাবি উবাই ইবনে কা’ব (রা.) শপথ করে বলেন যে, শবে কদর ২৭ রমজানের রাতেই (মেশকাত: মুসলিম)। শবে কদরে দোয়া কবুল হয়। তবে আরবিতে মুখস্ত কিছু দোয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের প্রয়োজন মাফিক সব ধরনের দোয়া করা। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ